এমপিপুত্র প্রার্থী হওয়ায় ‘আগুন জ্বলছে’ সেলিম প্রধানের গায়ে

সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধান। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে রূপগঞ্জের ভোলাবো ইউনিয়নের চারতালুক এলাকায় একটি কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ক্ষোভ ঝাড়েন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থিতা থেকে তার নাম বাদ পড়েছে।

সেলিম প্রধান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেছেন কোনও মন্ত্রী-এমপির ছেলে ও আত্মীয়-স্বজনরা উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন না। কিন্তু এমপিপুত্র (গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা) প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। কত বড় দুঃসাহস হলে এমন কাজ করতে পারে। আমার গায়ে আগুন জ্বলতেছে। অথচ এত বছর ধরে তারা কী থেকে কী হয়েছে, তা জনগণ খুব ভালো করে জানেন।’

উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীরা সবাই মিলে গেছে উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, ‘আমার হাতে একটি ছবি এসেছে। ছবিতে দেখেন, এমপিপুত্র উপজেলা নির্বাচনের তিন প্রার্থীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। রূপগঞ্জকে ওরা ধ্বংস করে ফেলেছে। মাদকের ব্যবসা, কিশোর গ্যাং ও বড় বড় রাম দা নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দিন শেষ। জনগণ তাদের বিচার করবেন। আপনারা কেউ আর ওদের ভয় পাবেন না। ওদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভেস্তে দিচ্ছে উল্লেখ করে সেলিম প্রধান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চাইছেন সুষ্ঠু নির্বাচন, যাতে জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনাকে তারা (প্রার্থীরা) ভেস্তে দিচ্ছে। কেউ বলে কোটি, কেউ বলে দুই কোটি টাকা....। তারা মনে করে টাকা দিয়ে সবকিছুতে রেহাই পেয়ে যাবে। দুর্নীতি করতে করতে তাদের মন-মানসিকতা বদলে গেছে। তারা নিজেদের রাজা মনে করে। তারা প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করে ফায়দা লুটছে। এভাবে আর চলবে না।’

জনগণের সেবা করতে চেয়ারের প্রয়োজন হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যখন জনগণের সেবা করা শুরু করি, তখন থেকে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল না। আর জনগণের সেবা করতে হলে চেয়ারে বসতে হয় না। আমি প্রধান, আমার চেয়ারের দরকার নাই। আমি ধারাবাহিকভাবে জনগণের সেবা করে যাবো। আর রূপগঞ্জে কেউ মাদকের ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা, কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাস করতে পারবে না। রূপগঞ্জকে পরিবর্তন করে ছাড়বোই।’

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা না মানলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্কতা বার্তা দেওয়া হয়েছে। তবে এমন নির্দেশনা সত্ত্বেও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে গাজী গোলাম মর্তুজা। তবে একই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে লড়তে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েন সেলিম প্রধান।

দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হয়েছে ২১ এপ্রিল, বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি হবে ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। এ ধাপে ১৬১ উপজেলায় আগামী ২১ মে ভোট হবে।