ত্বকী হত্যার ১৩৮ মাস উপলক্ষে মোমশিখা প্রজ্বালন

সাগর-রুনি ও তনুসহ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইলেন ত্বকীর বাবা

মেধাবী ছাত্র তানভীন মুহাম্মদ ত্বকীর বাবা ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, ‘আমরা ত্বকী হত্যার বিচার চাই। সাগর-রুনি ও তনু হত্যার বিচার চাই। এ ছাড়া ত্বকী, আশিক, চঞ্চল, ভুলুসহ নারায়ণগঞ্জে ওসমান ওসমান পরিবার কর্তৃক সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। এসব হত্যাকাণ্ডের বিচারের মধ্য দিয়ে সরকার তার চরিত্রের প্রকাশ ঘটাবে। এ সরকার আমাদের আকাঙ্ক্ষার ও জনবান্ধব সরকার কি না এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যায় কি না তা বুঝতে পারবো।’

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ত্বকী হত্যার ১৩৮ মাস উপলক্ষে আয়োজিত মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে এই আয়োজনে শহীদ মিনারের পাদদেশে নিহত ভুলু সাহা, শহীদুল ইসলাম, তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী, দিদারুল ইসলাম ও আশিক হোসেনের ফেস্টুন রাখা হয়।

সারা দেশে চলমান হামলা ও দখলবাজির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি বিভিন্ন জায়গায় স্কুল দখল হয়ে যাচ্ছে। মসজিদ কমিটি দখল করে ফেলছে। বিভিন্ন মাজারে হামলা হচ্ছে। এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। কোনও একটি মতের মানুষ আরেক মতের মানুষের টুঁটি চেপে ধরবে তা আমরা সভ্য দেশে এটা কাম্য করি না। এর বিরুদ্ধে প্রশাসনের শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ফলে জাতি–ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার দেশ হবে। আমাদের আকাঙ্ক্ষার একটি সুন্দর দেশ হবে। কিন্তু আমাদের সংশয়, ভয় দূরীভূত হচ্ছে না। কারণ যে সরকার যখন ক্ষমতায় গেছে তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাই আমাদের স্বপ্নের জন্য হাজারো ছাত্র-জনতা যে প্রাণ দিলো, সেই স্বপ্নের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।’

অনুষ্ঠানের আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি প্রদীপ ঘোষ বাবু, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কবি হালিম আজাদ, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল সুজনসহ অন্যান্যরা।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ শহরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।