ঢাকায় শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় রাজবাড়ীতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদের মুখে ক্ষমা চাইলেন সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ী সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক পরিবারের ব্যানারে প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপরই এক সিনিয়র শিক্ষক এর প্রতিবাদ জানান। সে সময় তার সঙ্গে অন্য শিক্ষকরাও প্রতিবাদ জানালে মানববন্ধন চলাকালে মাইকে ‘জয় বাংলা’ বলায় ক্ষমা চান ওই শিক্ষক। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া শিক্ষকের নাম অমরেশ চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
এ ব্যাপারে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিদ্যালয়টির সিনিয়র শিক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঢাকায় শিক্ষক লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছিলাম। এতে জেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ছিলেন। প্রধান শিক্ষক অমরেশ চন্দ্র বিশ্বাস তার বক্তব্যের শেষে জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছেন। আমি প্রথমে এর প্রতিবাদ জানাই। পরে আমার সঙ্গে অন্য শিক্ষকরাও প্রতিবাদ জানান।’
প্রতিবাদ জানানোর কারণ হিসেবে এই শিক্ষক বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। শত শত ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক অমরেশ চন্দ্র এখনও জয় বাংলা স্লোগান দেন কীভাবে? এজন্য প্রতিবাদ করেছি। এখনও আমাদের আশপাশে শেখ হাসিনার প্রেতাত্মা রয়েছে। যে কারণে এখনও তারা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক অমরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘শিক্ষা ভবনে সেসিপ প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় আজ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে আমাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। বক্তব্য শেষে ভুলবশত জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ফেলেছি। পরে শিক্ষকদের প্রতিবাদের মুখে ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।’
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শিক্ষা ভবন ঢাকায় সেসিপ প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। শিক্ষকদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি আমরা। তা না হলে কঠোর আন্দোলনে যাবো।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জেল হোসেন, সহকারী শিক্ষক আবু সাঈদ ও রেজাউল করিম প্রমুখ।