৯৯৯ নম্বরে ফোন করে মেয়ে বললেন ‘আমি আমার বাবাকে হত্যা করেছি’

সাভারে এক ব্যক্তিকে হত্যার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তার মেয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভোরে সাভার পৌর এলাকার মজিদপুরে ‘নূর মোহাম্মদ ভিলার' পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে বলে সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিঞা জানান।

নিহত ৫৫ বছর বয়সী আব্দুর সাত্তার নাটোর জেলার সিংড়া থানার ভগা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। তিনি মেয়েকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন।

সাত্তারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় সাত্তারের ২৩ বছরের মেয়ে জান্নাত জাহান শিফাকে আটক করেছে পুলিশ।

সাভার মডেল থানার এসআই আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ভোররাত ৪টার দিকে এক নারী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বলেন যে, আমি আমার বাবাকে হত্যা করেছি। আমাকে ধরে নিয়ে যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আব্দুর সাত্তারের লাশ উদ্ধার করে এবং মেয়ে জান্নাতকে আটক করে।’

নূর মোহাম্মদ ভিলার কেয়ারটেকার রহিজ উদ্দিন বলেন, ‘৫ মাস আগে বাবা ও মেয়ে পাঁচতলার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। তবে তাদের ফ্ল্যাটে কি হয় না হয় আমরা কিছুই জানি না।’

সাভার মডেল থানার এসআই ইমরান হোসেন জানান, আব্দুর সাত্তারের নামে ২০২২ সালে তার মেয়ে জান্নাত নাটোরের সিংড়া থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করেছিলে। ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘ওই মামলায় সাত্তার দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। জামিনে বের হয়ে আবার মেয়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। তবে ওই মামলার জেরে বাবা-মেয়ের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। মেয়েকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপও দিচ্ছিলেন সাত্তার।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর জেরে বুধবার রাতে ভাতের সঙ্গে ২০টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবাকে খেতে দেয় জান্নাত। পরে তিনি ঘুমিয়ে পড়লে ভোরের দিকে জান্নাত ধারালো ছুরি দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে জরুরি সেবা নম্বরে ফোন করে হত্যার বিষয়টি জানায়।’

এসআই ইমরান বলেন, ‘ফ্ল্যাটে বাবা-মেয়ে দুজনেই থাকতো। জান্নাতের মায়ের সঙ্গে তার বাবার কোনও সম্পর্ক ছিল না। জান্নাতকে আটকের সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা একটি ছুরি জব্দ করা হয়েছে।’

এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।