ঘরে পড়ে ছিল গৃহবধূর মরদেহ, সন্তানদের নিয়ে পালিয়েছে স্বামী

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় লাকি আক্তার (২৬) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। পুলিশ বলছে, ‘এটা হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা তা এখনও নিশ্চিত নই।’

সোমবার (১৯ মে) রাত সাড়ে ১১টায় ফতুল্লা রেলস্টেশন এলাকায় ফজলু মিয়ার ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত লাকি আক্তার পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার শ্বানেস্বর গ্রামের সাত্তার হাওলাদারের মেয়ে ও ফতুল্লা রেলস্টেশন এলাকার কসাই শিপনের স্ত্রী।

নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, ফতুল্লা বাজারের কসাই শিপনকে (৪০) ভালোবেসে বিয়ে করেন লাকি আক্তার। তাদের সংসারে ১০ বছরের এক ছেলে ও ৬ বছরের এক মেয়েসন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তারা ফতুল্লা রেলস্টেশন এলাকায় ফজলু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। গতকাল রাতে শিপন তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে ফোন করে জানান, লাকি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

এ খবর পেয়ে লাকির বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা গিয়ে ওই ভাড়া বাড়ির একটি কক্ষের দরজার তালা ভেঙে লাকির নিথর দেহ দেখতে পান। তার মুখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চাদর দিয়ে তার শরীরের অর্ধেক অংশ ঢাকা ছিল। এ অবস্থায় লাকিকে দ্রুত শহরের খানপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে নিহতের ভাগনে ইমাম হোসেন বলেন, ‘লাকি আক্তারকে হত্যা করে তার স্বামী দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের গলায় ফাঁস দেওয়ার দাগ রয়েছে। এ ছাড়া গালে ও মুখে চড়থাপ্পড়ের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, তবে এগুলো মৃত্যুর কারণ হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী তার দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ফলে এই বিষয়টিও বেশ সন্দেহজনক। তবে এটা হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।’