উপকূলের ৭৪০ গ্রামে ‘নবযাত্রা’ কর্মসূচি

উপকূলউপকূলীয় এলাকার দুই লাখ পরিবারের স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি খাতে সহযোগিতা, কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ, খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি ও দুর্যোগ সহনশীলতার জন্য নবযাত্রা নামে একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। পাঁচ বছর মেয়াদী এই কর্মসূচিতে ব্যয় হবে ৫৯০ কোটি টাকা। খুলনার দাকোপ ও কয়রা এবং সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নের ৭৪০টি গ্রামে এই কর্মসূচি চলবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম) এমপি বুধবার খুলনায় একটি হোটেলে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ওয়ার্ল্ড ভিশনের ন্যাশনাল ডিরেক্টর ফ্রেড উইটেভিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাট, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন ইউএসএইড মিশনের পরিচালক জেনিনা মেরুজেলস্কি, ওয়ার্ল্ড ভিশন ইউএসএ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেড হফম্যান, নবযাত্রা কর্মসূচির চিফ অব পার্টি মি. রাকেশ কাটাল অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘এ এলাকার মানুষের দুর্ভাগ্য এই যে একটি দুর্যোগ থেকে  পুনরুদ্ধারের আগেই আরেকটি দুর্যোগের মুখোমুখি হন তারা।  এর ফলে তাদের দুর্যোগ সহনশীলতার মাত্রা আরও হ্রাস পায়।  গত এক দশকে সিডর, আইলা, মহাসেন এর মত ঘূর্ণিঝড় এই অঞ্চলে ব্যাপক প্রাণহানী ও অর্থনৈতিক ক্ষতি ঘটিয়েছে।  এমতাবস্থায় সরকারি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি নবযাত্রা কর্মসূচি এই অঞ্চলের মানুষের দুর্যোগ সহনশীলতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে।’

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে উল্লেখ করে মন্ত্রী বিশ্ববাসীর কাছে এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘১৯৭০ এর ঘূর্ণিঝড়ের কথা এখনও এ এলাকার বয়স্ক মানুষেরা ভোলন নাই। সে ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১০ লাখ লোক মারা গিয়েছিল।  ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে লক্ষাধিক লোক মারা গিয়েছিল।  এগুলো হয়েছিল আমাদের প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকার কারণে।  আমরা সে অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়েছি।  আমরা এখন যে কোনও ঘূর্ণিঝড়ে জনগণকে ৫দিন আগেই সতর্কবার্তা দিতে পারছি।  উপকূলীয় লাখ লাখ লোককে সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে পারছি। আমাদের উপকূলীয় স্বেচ্ছাসেবকরা জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে সহযোগিতা করছে। যে কোনও ব্যক্তি মোবাইল ফোন থেকে ১০৯০ নম্বরে ফোন করে দুর্যোগের আগাম বার্তা পেতে পারেন।  এর জন্য কোনও খরচ হবে না।’

উপকূলীয় এলাকার  জনগণের সমস্যার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান সমস্যা সুপেয় পানির অভাব।  লোনা পানির কারণে তাদের কৃষিকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দারিদ্র্যের জন্য এখনও এ এলাকার শিশুদের মাঝে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ার হার অধিক।  তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।  এর জন্য স্কুল ফিডিং কার্যক্রমকে প্রসারিত করতে হবে।’

আরও পড়ুন- 

মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ আলীর সংসার চলে ভিক্ষা করে!
বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ১০ হাজার রোহিঙ্গা: জাতিসংঘ

/এফএস/