চিতা বিড়ালই খেয়েছে সুন্দরবনের করমজল প্রজনন কেন্দ্রের ১৯টি কুমিরের বাচ্চা। বনবিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। আর উধাও হওয়া এবং মৃত ৪৩টি কুমির বাচ্চার বিষয়টি নির্ভর করছে পুলিশের তদন্তের ওপর। বনবিভাগ বলছে, ফৌজদারি মামলা থাকায় পুলিশই এ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। অথচ কুমিরের বাচ্চা উধাও ও মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত প্রথম তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল প্রজনন কেন্দ্রের দুই কর্মচারী এসব বাচ্চা পাচারের জন্য দায়ী।
তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, করমজলের কুমির রাখার ব্লকে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সেটি যাচাই-বাছাই করা হয়। সেখানে স্থাপন করা ট্র্যাপিং ক্যামেরা চেক করে চিতা বিড়ালে কুমিরের বাচ্চা খাচ্ছে এমন দৃশ্য পাওয়া যায়। এতে তদন্ত দল পরের ১৯টি কুমিরের বাচ্চা হারানোর জন্য চিতা বিড়ালকে দায়ী করে।
তবে যেহেতু মামলা হয়েছে, সেহেতু প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় পাচার বা চুরি হওয়া ৪৩টি কুমিরের বাচ্চার বিষয়ে পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর অভিযুক্ত দুই বনরক্ষীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে, বলে মত দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক মেহেদী-উজ্জামান বলেন, ‘কুমিরের বাচ্চা উধাও ও হত্যার ঘটনা বন্যপ্রাণী ঘটিয়েছে এমন ধারণা হলে ১০টি ট্রাপিং ক্যামেরা বসানো হয়। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ওই চিতা বিড়ালটি দেখতে পাওয়া যায়। রাতেই এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলকে জানিয়ে চিতা বিড়ালটিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।’
করমজলের ২৭৭টি কুমির ছানার মধ্যে ৬২টি ছানাই ওই বিড়াল খেয়েছে এমন অভিমত প্রকাশ কলে এই বন কর্মকর্তা আরও বলেন, “প্রথম দফার তদন্ত প্রতিবেদন ছিল ‘অনুমান নির্ভর’। চিতা বিড়ালটির পোস্টমর্টেম রিপোর্টে তার পেটে কুমিরের শরীরের অনেকগুলো খণ্ডাংশ ও মাথা পাওয়া গেছে।’
উল্লেখ্য, গত ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্র হতে দু’দফায় ৩৭টি কুমির বাচ্চা রহস্যজনক ভাবে গায়েব হয়। এছাড়া মৃত উদ্ধার হয় আরও ৬টি কুমির বাচ্চা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট বিভাগ এক বনকর্মীকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত ও অস্থায়ী এক কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতির পর তাদের আসামি করে থানায় মামলা করে। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ৫ ফেব্রুয়ারি নতুন করে আরও ১৯টি কুমির বাচ্চার খণ্ডিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
/এমও/টিএন/