‘মোরা’র খবরে আতঙ্কিত উপকূলবাসী

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপকূলে প্রস্তুতি

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ র প্রভাবে মংলা সমুদ্র বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দুপুর থেকেই জেলায় গুড়িগুড়ির বৃষ্টি সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি আকারের দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র খবরে বাগেরহাটের উপকূলীয় এলাকা মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল ও মংলা এলাকার মানুষ চরম আতঙ্কে আছে। সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব এলাকার মানুষের মধ্যে ‘মোরা’ নিয়ে নানা উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তারা নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য নানা প্রস্তুতি নিয়েছেন। অনেকে সহায় সম্বল যে টুকু আছে সেটুকু নিয়ে এলাকায় রয়ে যাচ্ছেন। অনেকের মাঝে নানা কল্পনা-জল্পনা চলছে। উপকূল ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের ছগির মিস্ত্রি জানান, সোমবার সকাল থেকে ধীরে ধীরে আবহাওয়া খারাপ হচ্ছে। দুপুরের পর থেকে দমকা হাওয়ার সঙ্গে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া বুলেটিং শুনে আমরা আতঙ্কিত। জানি না কখন কি হয়। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

মোড়েলগঞ্জের বারুই খালী গ্রামের মইনুল ইসলাম বলেন, ‘ঝড়ের কথা শুনলে আমার সিডর- আইলার কথা মনে পড়ে যায়। ভয়ে থাকি কখন কি হয়। সতর্ক সঙ্কেত বেড়েছে শুনে ভয় লাগছে। কারণ ঝড়ে আমার কাঁচা ঘরটা পড়ে যাবে।’

শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা বাজারের ব্যবসায়ী মাহফুজুর রহমান বাপ্পী জানান, ‘ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ে এলাকাবাসী আতঙ্কিত। বিকালের মধ্যেই লোকজন ঘরে ফিরে গেছে। তারা সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রায়েন্দা বাজার সন্ধ্যার আগেই শূন্য হয়ে গেছে।’

রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র খবরে সাধারণ মানুষের মাঝে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। আতঙ্কিত এসব লোকজনকে ধর্য্যে সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবেলায় উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতিমূলক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জরুরি সভা করে দুর্যোগ মোকাবেলায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ৮৩টি মেডিক্যাল টিম  ও ২৩৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার তৈরি রাখা হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: 'মোরা' মোকাবিলায় বান্দরবানে খোলা হয়েছে ৭টি আশ্রয়কেন্দ্র