ফেসবুকের আদলে স্কুলছাত্রের ওয়েবসাইট, হত্যার হুমকি!

Jhenidah a minor boy develop website and threat Photo 10-06-17 (2)

ঝিনাইদহে আবরার নূর অর্ণব নামের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের আদলে পোস্টটাচ ডটকম (posttouch.com) নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার। তারা অভিযোগ করেছেন, অর্ণবের তৈরি ওয়েবসাইটটি কয়েকবার হ্যাক করার পর পুরোটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারায় মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে অর্ণবকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে হ্যাকাররা। নিরাপত্তা শঙ্কায় প্রায় এক সপ্তাহ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না স্কুল ছাত্র অর্ণব ও তার পরিবার।

ঝিনাইদহ সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র অর্ণব। বাবা আব্দুল আলিম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা। থাকেন শহরের ব্যাপারীপাড়ার একটি ভাড়া বাড়িতে। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে কম্পিউটার চালানো শুরু করে। ইতোমধ্যে কম্পিউটার ও ওয়েবসাইট নির্মাণ নিয়ে অনেক কিছু শিখেছে সে। তারা বাবা জানান, ১৬ ডিসেম্বর থেকে সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন ওয়েবসাইট তৈরির কাজে হাত দেয়। ১৮ এপ্রিল সে সফল হয়। নাম দেয় পোস্টটাচ।  ৬৪ জন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলে। এরপর তৈরি করে অ্যাপস। তার এই সাফল্য চোখে পড়ে হ্যাকারদের।

আব্দুল আলিম জানান, গত ২২ মে প্রথম তার ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়। অনেক চেষ্টার পর তা উদ্ধার করা হয়। সর্বশেষ হ্যাকাররা এসকিউএল ইনজেকশান পুশ করে সব কিছু নষ্ট করে দেয়। অর্ণব আবার নতুন করে শুরু করে ওয়েবসাইটির কাজ। 

অর্ণবের বাবা আরও দাবি করেন, তার মোবাইল ফোনে প্রতি মুহূর্তে এসএমএস দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে হ্যাকাররা। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানানো হলে বাড়িতে পুলিশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবুও আতঙ্কিত পরিবার। বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না পরিবারের লোকজন। বন্ধ রয়েছে তার লেখাপড়া। অর্ণবের বাড়িতে কে বা কারা কখন আসছেন বা কখন যাচ্ছেন তা মোবাইলে বার্তা দিয়ে জানাচ্ছেন হ্যাকাররা। আর নিয়মিত চলছে হত্যার হুমকি। এমনকি সংবাদকর্মীদের যাওয়া ও আসার বিষয়েও ম্যাসেজ দিতে দেখা গেছে।

আব্দুল আলিম বলেন, 'এই ঘটনার পর থেকে আমার পরিবার নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। দ্রত হত্যার হুমকিকারী ও হ্যাকারদের আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।' 

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ বলেন, 'অর্ণবের বাবা একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন জানান, বিষয়টি জানার পর থেকে তিনি  অর্ণবের ও তার পরিবারে সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে তিনি সবসময় খোঁজ খবর রাখছেন।

/এমএইচ/