এছাড়া বেশির ভাগ সড়কের পাশে প্রয়োজনীয় জায়গা এবং মাটি না থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। এ জেলার বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের বেহাল অবস্থায় ঈদে ঘরমুখো মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন যানবাহনের চালকসহ ভুক্তভোগীরা।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলে সওজ বিভাগের অধীনে ১৭০ দশমিক এক কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়ক রয়েছে। এছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের (এলজিআই) আওতায় দুই হাজার ৯৫২ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে এলজিইডির ৪৫২ কিলোমিটার এবং এলজিআই’র দুই হাজার ৫০০ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এলজিআই হচ্ছে-ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদ। সেক্ষেত্রে এলজিআই’র রাস্তাগুলোর অবস্থা সবচেয়ে করুণ।
গোবরা মিত্র মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন জানান, নড়াইল-গোবরা-ফুলতলা সড়কের অবস্থা খুবই করুণ। এই সড়কের বীড়গ্রাম বটতলা, গোবরা কলেজ ও বাজার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থান ভেঙে গেছে। প্রায় চার বছর ধরে এ অবস্থা। একদিন বৃষ্টি হলে এই সড়কের ভাঙাচেরা অংশে সপ্তাহখানেক পানি জমে থাকে।
নড়াইল-যশোর সড়কের বাসচালক মকতুল হোসেন বলেন, এ সড়কে চরম ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা যাতায়াত করছেন। এছাড়া নড়াইল-মাগুরা-মাইজপাড়া সড়কের প্রবেশমুখে এলজিইডি ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মাঝামাঝি সড়কের ওপর দীর্ঘদিন ধরে ইট ও বালি কে বা কারা ফেলে রেখেছেন। কিন্তু তা সরাতে কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
অপর বাসচালক মোফাজ্জল হোসেন জানান, ভাটিয়াপাড়া-কালনা-লোহাগড়া-নড়াইল সড়কের এড়েন্দা, চৌগাছা ও মাদরাসা বাসস্ট্যান্ড এবং লক্ষীপাশা মোল্যার মাঠ এলাকায় বড় বড় গাছের গুড়ি ফেলে রাখা হয়েছে। এ কারণে রাস্তা সরু হয়ে গেছে। এছাড়া সড়কের ওপর ট্রাক দাঁড় করিয়ে প্রায় দিনই ঘণ্টার পর ঘন্টা গাছের গুড়ি উঠানো হয়। এতে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।
এদিকে, জেলা শহরের রূপগঞ্জ মুচিপোল সংযোগ সড়ক এলাকা থেকে ভওয়াখালী যাওয়ার রাস্তাটি দীর্ঘ ৯ মাস পানিতে ডুবে আছে বলে জানিয়েছেন ওই সড়কের বসবাসরত শফিকুল ইসলাম নান্নু। সামান্য বৃষ্টি হলেই নড়াইল পুরাতন বাস টার্মিনাল এলাকায় পানি জমে যাচ্ছে।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) জেলা সভাপতি সৈয়দ খায়রুল আলম জানান, নড়াইল-কালনা মহাসড়কের গা ঘেঁষে পাঁচটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এছাড়া লোহাগড়ার এড়েন্দা-আমাদা-লুটিয়া সড়কে দু’টি এবং নড়াইল-কালিয়া সড়কের আউড়িয়ায় একটি ইটভাটা সড়কের গা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে। এসব ভাটার মাটি পাহাড়ের মতো স্তূপ করে রাখা হয়েছে। বৃষ্টিতে ভাটার কাঁদামাটি সড়ক-মহাসড়কের ওপর পড়ে চলাচল অনুপোযোগী হয়ে গেছে। মোটরসাইকেলসহ দুই এবং তিন চাকার গাড়িগুলো ভাটার কাছে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পতিত হয়। দুই বছরের ব্যবধানে ভাটা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশ দাবি করে বলেন, জেলার সড়ক-মহাসড়কগুলোর অবস্থা ভালো। তেমন কোনও সমস্যা নেই।
এ ব্যাপারে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবু ছায়েদ বলেন, বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে সড়কগুলো সংস্কার করা হবে।
/বিএল/