বাগেরহাটে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত আলিমুন বাঁচতে চায়

বিরল রোগে আক্রান্ত আলিমুনবাগেরহাটে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হতদরিদ্র পরিবারের ৯ বছর বয়সী পিতৃহীন শিশু আলিমুন শেখ বাঁচতে চায়। চিকিৎসা নিয়ে অন্য সবার মতো লেখাপড়া শিখে বড় হতে চায় সে। কিন্তু কে তার চিকিৎসা করাবে? মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে রোগাক্রান্ত আলিমুনের অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে না পেরে জীবন প্রদীপ ক্রমেই নিভে আসছে। তার মা বলছেন, সরকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলে তাকে বাঁচানো সম্ভব।
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দর গ্রামের শিশু আলিমুনের বাবা আজাহার শেখ মারা যান চার বছর আগে। স্বামীর মৃত্যুর পর দুই ছেলেকে নিয়ে সকিনা বেগম অকূল সাগরে পড়েন। এর কিছুদিন পরে ছোট ছেলে আলিমুনের মাথায় টিউমারের মতো দানা দেখা দেয়। প্রথমে অল্প কয়েকটি দেখা দিলেও ক্রমেই তা বাড়তে থাকে। এখন মাথার এই দানাগুলো অনেক বড় হয়েছে। পিঠেও দেখা দিয়েছে দানা। এগুলোর ওপর ক্ষত হচ্ছে। মাঝে মাঝে বের হচ্ছে রক্ত।
বর্তমানে আলিমুনের মা মাঠে কাজ করে যে টাকা পান তা দিয়ে দুই ছেলে ও শাশুড়িকে নিয়ে কোনও রকমে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করেন।
শুরুতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করিয়ে কোনও উপকার না পেয়ে বছর দুয়েক আগে খুলনার কয়েকজন ব্যক্তি চাঁদা তুলে আলিমুনকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ১৯ দিন চিকিৎসা শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তখন মাথা থেকে রক্ত নিয়ে ঢাকায় পরীক্ষা করানো হয়েছিল। রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ হয়েছিল- শুধু এতটুকুই জানেন সকিনা বেগম।বিরল রোগে আক্রান্ত আলিমুন
তিনি বলেন, ‘সারাদিন রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে যে পয়সা পাই, তা দিয়ে কোনোমতে দিন যায়। ছেলের চিকিৎসার কথা ভাবতেই পারি না।’ শিশু আলিমুন শেখ বলে, ‘আমার বাবা মারা গেছেন। তাই আমার চিকিৎসা হয় না। আমি বাঁচতে চাই।’
গ্রামের পল্লী চিকিৎসক জাহিদুল ইসলাম অনেকদিন ধরে মসজিদভিক্তিক গণশিক্ষায় শিক্ষকতা করেন। এইখানেই পড়াশোনা করে আলিমুন শেখ। তিনি ফেসবুকে আলিমুনের একটি ছবি পোস্ট করলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আলিমুন খুব মেধাবী। জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা না করালে ছেলেটিকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।’
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. অরুন চন্দ্র মণ্ডল জানান, ‘খবরটি জানার পর শিশুটিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তির পর মেডিক্যাল টিম গঠন করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
/এএম/আপ-এআর/