চুয়াডাঙ্গার মেয়রের কেন এই বেশ?

ছদ্মবেশে চুয়াযাঙ্গার মেয়র (ছবি: সংগৃহীত)চুয়াডাঙ্গা শহরের রাস্তায় রাস্তায় ও ঠিকাদারী কাজ চলমান সাইটগুলোতে সপ্তাখানেক ধরে মুখ ঢাকা একজনকে ঘুরতে দেখা গেছে। তার পরনে ছিল লুঙ্গি, পাতলা হাফহাতা শার্ট বা গেঞ্জি, মুখ ও গলায় গামছা এবং মাথায় লাল ক্যাপ। তিনি চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এই বেশের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। ঠিকাদারি কাজে দুর্নীতি রুখতে এবং চুয়াডাঙ্গাবাসীর দুঃখ-দুর্দশা ও ভোগান্তি নিজ চোখে দেখতেই এরকম ছদ্মবেশ ধারণ করে পথে পথে ঘুরেছেন বলে জানান মেয়র। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, জনপ্রিয়তার আশায়ই মেয়র এসব করছেন।ছদ্মবেশে চুয়াযাঙ্গার মেয়র (ছবি: সংগৃহীত)

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপুকে শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে দেখা গেছে। কখনও হেঁটে, কখনও রিকশাচালক সেজে আবার কখনও শহরের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোয় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে দেখেছেন এলাকাবাসী। তিনি ছদ্মবেশে শ্রমিকদের সঙ্গে মিশে গিয়ে কাজ করেছিলেন বলে কেউ তাকে চিনতেও পারেনি। তবে ঘণ্টাখানেক এই বেশে থাকার পর আশপাশের লোকজনের কাছে তার পরিচয় প্রকাশ পেয়ে গেলে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করতেন।ছদ্মবেশে চুয়াযাঙ্গার মেয়র (ছবি: সংগৃহীত)

মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে এ বিষয়ে বলেন, ‘পৌর শহরের ৯টি ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সড়ক বাতিসহ সব ধরনের উন্নয়নের জন্য গত ২৫ জুলাই থেকে ইউজিপি-৩ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। যা চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার পর সব থেকে বড় উন্নয়নমূলক কাজ। এ সব কাজে কোনও ঠিকাদার বা তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা কোনও রকম দুর্নীতি করছে কিনা এবং সাধারণ জনগণের ভোগান্তিগুলো নিজের চোখে দেখার জন্য আমি এ পথ বেছে নিয়েছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে ঠিকাদাররাই দুর্নীতি করে প্রকল্পের অর্থ নয়ছয় করে। আর যে কাজ করে তার মান হয় খুবই হতাশাব্যঞ্জক। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আবার অল্প কিছুদিন পরেই তা নষ্ট হয়ে যায় বা সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দেয়। তাই এ ধরণের দুর্নীতি ঠেকাতে নিজেই রাস্তায় নেমেছিলাম।’ছদ্মবেশে চুয়াযাঙ্গার মেয়র (ছবি: সংগৃহীত)

পৌরবাসীদের কাছ থেকে জানা গেছে, এর আগেও মেয়র তার লোকবল নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন।

তবে মেয়রের অভিনব এই তৎপরতা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মনি জানান, মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু জেলায় নিজের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য প্রায়ই এ ধরনের কাজ করে থাকেন।  নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রশ্ন তুলেছেন, জনপ্রিয়তার জন্য না হলে ছদ্মবেশে থাকা অবস্থায় তার ছবি তুলে পরে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে কেন ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে।