নিলাম বন্ধ থাকায় সুন্দরবনে নষ্ট হচ্ছে শত শত নৌকা ও কয়েক লাখ টাকার কাঠ

নিলাম বন্ধ থাকায় সুন্দরবনে নষ্ট হচ্ছে শত শত নৌকা ও কয়েক লাখ টাকার কাঠ (ছবি: প্রতিনিধি)আট বছর ধরে নিলাম বন্ধ থাকায় এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সুন্দরবন বিভাগে জব্দ করা লাখ লাখ ঘনফুট সুন্দরী ও পশুর কাঠ পড়ে আছে। একইসঙ্গে নষ্ট হচ্ছে শত শত ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ও নৌকা। বনবিভাগও কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সূত্রমতে, সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই ও শরনখোলা রেঞ্জের আওতাধীন স্টেশন ও টহল ফাঁড়িগুলোতে লাখ লাখ ঘন ফুট সুন্দরী ও পশুর কাঠ এবং শত শত ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ও নৌকা দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে। সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা ও আইনি জটিলতায় ২০০৯ সাল থেকে এগুলো নিলামে তোলা যাচ্ছে না।

সূত্র আরও  জানায়, বনবিভাগ বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে বনের ভেতর ও সংলগ্ন এলাকা থেকে চোরাকারবারিদের ব্যবহৃত ট্রলার ও নৌকা আটক করে থাকে। সুন্দরবনের চাঁদপাই ও শরনখোলা রেঞ্জের ঢাংমারী, চাঁদপাই, জিউধরা, শরনখোলার বগি, সুপাতি ও দুবলা ফরেস্ট স্টেশনে জব্দ পাঁচ শতাধিক নৌকা ও ট্রলার রয়েছে। আর সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগে জব্দ নৌযানের সংখ্যা এর প্রায় দ্বিগুণ। অযত্ম-অবহেলায় এসব ট্রলার ও নৌকা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এসব ট্রলার ও নৌকা এখন স্টেশন ও টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীদের কাছে অনেকটা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।নিলাম বন্ধ থাকায় নষ্ট হয়ে শত শত নৌকা ও লাখ লাখ টাকার কাঠ (ছবি: প্রতিনিধি)

চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাংমারী, চাঁদপাই ও জিউধরা স্টেশনের আওতাধীন টহল ফাঁড়িতে অন্তত ২৮৩টি নৌকা ও ট্রলার আটক রয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার রয়েছে।’

এসব ট্রলার ও নৌকা নিলামে তুললে বনবিভাগের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হতো। জব্দ ট্রলার ও নৌকাগুলো নিলামে বিক্রি করলে চোরাকারবারি চক্রের সদস্যরা কমমূল্যে কিনে তা আবার চোরাচালান কাজে ব্যবহার করবে এমন ধারণা বনবিভাগের। আর এ কারণে আটক ট্রলার ও নৌকাগুলো নিলামে বিক্রি করা হচ্ছে না বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানান চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মেহেদীজ্জামান। তিনি আরও বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে সুন্দরী ও পশুর কাঠের নিলাম বন্ধ রয়েছে। নিলামের সুযোগে অবৈধভাবে গাছ কাটা ও কাঠ পাচারের প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে সন্দেহে সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়।’  

জব্দ সুন্দরী ও পশুর কাঠ নিলামে বিক্রির অনুমতি দিলে সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পেতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু নিলাম বন্ধ থাকায় এগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন- পূজার আনন্দ আমার পরিবারে নাই: রসরাজ দাস