শীতের আগাম সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি

সবজি ক্ষেতকাক ডাকা ভোর থেকে ফসলের পরিচর্যা শুরু করেন খুলনার কৃষাণ-কৃষাণিরা। এরপর দিনভর চলে তাদের কাজ। কেউ ক্ষেতের আগাছা তুলছেন, আবার কেউবা ছিটাচ্ছেন বালাইনাশক। লক্ষ্য একটাই শীতের শুরুতেই সবজি বাজারজাত করে লাভবান হওয়া। এরই মধ্যে কিছু সবজি বাজারে এসেছে। তবে নভেম্বরের শেষের দিকে বাজারে আরও বেশি পরিমাণ সবজি থাকবে। চাষাবাদ ভালো হওয়া এবং বাজারে সবজির দাম বেশি থাকায় খুশি সবজি চাষিরা।

শীতের আগাম সবজি বিক্রি করে চাষিরা দাম ভালো পাচ্ছেন। এরই মধ্যে কিছু সবজি বিক্রিও করেছেন তারা। এ বছর জেলার ৯ উপজেলার সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে শীতের সবজি চাষ হয়েছে। যা থেকে ৪০০ কোটি টাকার বেশি সবজি বিক্রি হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

সবজি ক্ষেতে কাজ করছেন কৃষকরা

গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয়। এতে লালশাক, পালংশাক, মুলা, লাউ, বেগুন ও ফুলকপির বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। মৌসুমের প্রথমেই মুখ থুবড়ে পড়েন সবজি চাষিরা। তবে দুর্যোগ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ান তারা। সেইসব চাষিরাই কিছুদিনের মধ্যে সবজি বাজারজাত করবেন বলে আশা করছেন।

খুলনায় গত অর্থবছরে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছিল ৬ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু এ বছর এখন পর্যন্ত সবজি চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে।

সবজি ক্ষেত

ডুমুরিয়ার কৃষক আজগর হোসেন বলেন, ‘অগ্রিম সবজি মানেই ভালো মূল্য, অধিক মুনাফা। তাই সেপ্টেম্বরেই শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। কিন্তু অক্টোবরে বৃষ্টিতে প্রথম দফায় হোঁচট খেতে হয়েছে আমাদের।’

বটিয়াঘাটার কৃষক আম্বিয়া বেগম বলেন, ‘সবজি চাষ বৃদ্ধিতে জেলায় বেড়েছে কৃষি শ্রমিকের চাহিদা। ফলে চাষিদের পাশাপাশি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষও।’

খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল লতিফ বলেন, খুলনায় এ বছর ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে আগাম চাষ করা হয়েছে।

23602114_1365716830204339_926382822_n

সবজি আবাদ কম হওয়ায় কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্ষার কারণে সবজি আবাদে বিলম্ব হয়েছে। তাই এবার গত বছরের তুলনায় উৎপাদন কম হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরে খুলনায় তিনটি মেট্রো থানাসহ ১১টি উপজেলায় ৬ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সবজি চাষ করা হয়েছে ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। তবে এ চাষাবাদ আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলমান থাকবে বলে জানা গেছে।