খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হেরোইন ও ইয়াবা আগুনের তাপে গরম করলে তরলে পরিণত হয়। এসময় ওই তরল পদার্থ থেকে যে ধোঁয়া বের হয়, তা ‘পান্নী’ বা বিশেষ ধরনের পাইপের মাধ্যমে সেবন করে থাকে মাদকাসক্তরা। আগে হেরোইন বা ইয়াবা সেবনের পাইপ তৈরিতে সিগারেটের প্যাকেটের ভেতরে থাকা রাঙতা কাগজ ব্যবহার হতো। কিন্তু তার বদলেই এখন ব্যবহৃত হচ্ছে ২ টাকা ও ৫ টাকার নোট।
মাদকসেবীরা বলছে, অন্য কাগজের পাইপ অল্প তাপেই পুড়ে যায়। একবার নেশা করতে হলে তিন/চার বার পাইপ পাল্টাতে হয়। এই ‘ঝামেলা’ থেকে তাদের মুক্ত করেছে বাংলাদেশি ২ টাকার ও ৫ টাকার নতুন নোট। এসব নোট দিয়ে পাইপ তৈরি করলে একবারেই নেশার কাজ শেষ হয় বলে দাবি মাদকসেবীদের। এই দুই নোট একটু আলাদা ধরনের কাগজে তৈরি। নতুন অবস্থায় এসব নোট সহজে পানিতে ভিজে যায় না এবং গরমে পুড়ে ছাইও হয় না। তাই নেশাখোরদের কাছে বাংলাদেশি ২ টাকা ও ৫ টাকার নোট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, মাদকসেবীদের কাছে এভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার কারণেই কিছু ভারতীয় অসাধু ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার লোভে বৈধ ও চোরাই পথে বাংলাদেশে এসে ২ টাকা ও ৫ টাকার নতুন নোট সংগ্রহ করে পাচার করছে। প্রায়ই বিজিবি ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের হাতে আটক হচ্ছে পাচারকারীরা। ধরা পড়ছে ২ টাকা ও ৫ টাকার নতুন নোট।
বিজিবি জানিয়েছে, গত ৩ নভেম্বর বাংলাদেশি ২ টাকার ২৬ হাজার নতুন নোটসহ তাদের হাতে আটক হন নাসিম উদ্দিন। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ইকবালপুর এলাকার বাসিন্দা। এরপর ১০ নভেম্বর নো ম্যান’স ল্যান্ড থেকে বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যদের হাতে আটক হন কলকাতার আরমান স্ট্রিটের ইউসুফ আলীর ছেলে নাসের উদ্দিন। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বাংলাদেশি ২ টাকার ৪১ হাজার ৬শ নতুন নোট।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের কাস্টমস তল্লাশি কেন্দ্রে ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন থাকলেও পাসপোর্ট যাত্রীর মাধ্যমে কীভাবে এই টাকা ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
নতুন ২ ও ৫ টাকার নোট পাচারের বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার আব্দুল ওয়াহাব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশি টাকা অবৈধভাবে পাচার হোক, কোনোভাবেই আমাদের বাহিনী এটা হতে দেবে না। আর এই নোটগুলো কী কাজে ব্যবহার হয়, তা আমার সঠিক জানা নেই।’