নিহত পলাশ কুমড়ী গ্রামের গোলাম রসুল ওরফে নোয়াইয়ের ছেলে। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে তাকে হত্যা করা হয়। তার শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন ও ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। ঘটনার পর নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হল রুমে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে হাটবাজার ইজারা সংক্রান্ত কমিটির সভাসহ কয়েকটি সভা ছিল। প্রথমে হাটবাজার-বালুমহল ইজারা সংক্রান্ত কমিটির সভা শেষ হলে কয়েকজন চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস রুমে চা-নাস্তা খান। দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক লতিফুর রহমান পলাশও তাদের সঙ্গে বসে চা-নাস্তা করছিলেন। চা খাওয়ার পর নিজ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ফরিদুজ্জামান বুলু কাজীকে সঙ্গে নিয়ে মোটর সাইকেলে করে ব্যাংকে যাওয়ার উদ্দেশ্যে উপজেলা কার্যালয় থেকে বের হন পলাশ। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে পৌঁছা মাত্র কয়েকজন অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত পলাশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলি মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মোটর সাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
পরে পলাশের মৃত্যদেহ লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে দিঘলিয়া এলাকার জনসাধারণসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা হাসপাতাল এলাকায় ভিড় করেন। ঘটনার পর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সিকদার আব্দুল হান্নান রুনুর নেতৃত্বে উপজেলা সদরে প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। ঘটনার পর লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান।
লোহাগড়া হাসপাতালের দায়িত্বরত জরুরি বিভাগের ডাক্তার দেবাশীষ জানান, হাসপাতালে আনার আগেই চেয়ারম্যানের মৃত্যু হয়েছে।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, ‘এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চেয়ারম্যান পলাশকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠনো হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
নিহতের ভাই নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য সাইফুর রহমান হিলু বলেন, ‘এলাকার প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। কুমড়ী গ্রামসহ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন অপকর্মে বাধা দেওয়ায় তারা বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে-গোপনে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিল।’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে লতিফুর রহমান পলাশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন।