নাটোরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড

মৃত্যুদণ্ড

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় স্ত্রী হত্যা মামলার রায়ে স্বামী ও তার বন্ধুর (খালাত ভাই) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের জেলা ও দায়রা জজ রেজাউল করিম এই রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত শাহমীম (২৭) কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার দক্ষিণ নগরাজপুর গ্রামের শাহজামান মানিকের ছেলে এবং রমিজুল আলম (২৩) একই উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে। রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত দণ্ডপ্রাপ্তরা ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে।

নাটোর কোর্ট ইন্সপেক্টর নাছির উদ্দিন মণ্ডল এবং জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার মোস্তাফি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে রেজেনা পারভিন ওরফে রুপালী ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর বগুড়া থেকে নিখোঁজ হন। তিন দিন পর নাটোরের সিংড়া উপজেলার রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের বাঁশের ব্রিজ এলাকার দ্বো-পুকুরিয়া গ্রামের একটি আবাদি জমি থেকে রুপালীর আগুনে পোড়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রুপালীর বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে স্বামী শাহমীমসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে সিংড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

কোর্ট ইন্সপেক্টর নাছির উদ্দিন মন্ডল দাবি করেন, মামলার আইও এসআই দেবব্রত দাস মামলা দায়েরের পর পরই কুড়িগ্রাম থেকে শাহমীম এবং সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে রমিজুলকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিরা তাদের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেওয়ার পর আদালত তাদের জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চুড়ান্ত অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কিন্তু পরবর্তীতে আসামির লোকজন উচ্চ আদালতে এই মর্মে কাজগপত্র দাখিল করেন যে, আসামিরা ওই মামলার গুরুত্বপূর্ণ কোনও আসামী নয়। এমন ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে নাটোর কারাগার থেকে মুক্ত হয়।এরপর থেকে তারা পলাতক।

নাটোর কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম দাবি করেন, উচ্চ আদালত থেকে জামিনের কাগজপত্র নাটোর আদালতে আসলে তা তদন্ত করে ভুয়া তথ্য সম্বলিত বলে প্রমাণীত হয়েছে। এরপর আদালত তাদের আবার গ্রেফতারের আদেশ দিলেও রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত তাদের গ্রেফতারা করা যায়নি। দীর্ঘ শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালত শাহমীম ও রমিজুলকে এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।