সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহাজন ব্যবসায়ীরা মাসিক চুক্তিতে বন বিভাগসহ স্থানীয় প্রশাসনের লোকদের ম্যানেজ করে বনের অনেক ভেতরে যায়। এসব মাছ ব্যবসায়ীরা বনদস্যুদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের অবৈধ ব্যবসায়ী চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মোংলা সদর দফতর) জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মিনারুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সুন্দরবনে জলদস্যুরা এমনি এমনিতো টিকে থাকতে পারে না, ওদের (দস্যু) বাজারসহ সবরকম প্রয়োজনীয় দ্রব্য সাপ্লাই (সরবরাহ) দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে যারা সাপ্লাই দেয় তাদের আমরা প্রায় অভিযান চালিয়ে ধরি।’
ব্যবসায়ী মনা, মতিয়ার ও জুলফিকার জানান, সাতক্ষীরার নলিয়ান এলাকার ব্যবসায়ী আইয়ুব মোল্লা, কুদ্দুস মোল্লা, খুলনার ঢাংমারীর শহিদ, মুন্না ও রেক্সোনা, দাকোপ উপজেলার মহাসিন ও ইয়াছিন এবং মোংলা উপজেলার চিলা এলাকার মজিবর, আলমগীর, পাকখালী গ্রামের লুক বাড়ই সুন্দরবনের জোংড়া এবং মরাপশুর ফরেস্ট ক্যাম্পের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই নিষিদ্ধ খালে মাছ শিকার করে থাকেন।
তবে দাকোপ উপজেলার মহাসিন ও ইয়াছিনের দাবি, ‘আমরা সুন্দরবনের কাঁকড়া মারি (ধরি)। এজন্য বনবিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে যাই। তবে নিষিদ্ধ খালে মাছ শিকার করি না। আর বনদস্যুদের সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ নাই।’
এদিকে গত বছরের নভেম্বরে দস্যুদের সঙ্গে সম্পৃক্তার অভিযোগে মহাসিন ও ইয়াছিনের দিগরাজের কাঁকড়ার আড়তে অভিযান চালায় র্যাব। তবে তাদের কাউকে র্যাব সেখানে পায়নি।
তবে শাহাদাৎ হোসেনের দাবি, তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অসাধু জেলেরা মাছ শিকার করলে তো কিছু করার নেই।
তারা আরও জানান, মাছ ধরতে গোন মুখে ১৫ দিনে গহীন বনে অবস্থান করার সময় হাজার হাজার জেলের জ্বালানি কাঠ বন থেকেই সংগ্রহ করতে হয়। এছাড়া তারা অভয়ারণ্য থেকে প্রতিনিয়ত হরিণ শিকার করে থাকেন বলে জানা গেছে। মাছ ব্যবসায়ীরা মাছ বহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রলারে করে এসব হরিণের মাংস এবং চামড়া পাচার করে থাকেন বলেও জানান তারা।
তিনি আরও বলেন, এ রেঞ্জের অধীন মরাপশুর ও জোংড়া এলাকায় ১৮টি খালকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কোন জেলে মাছ শিকার করে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুন্দরবনের খুলনা বিভাগের বন সংরক্ষক আমির হোসেন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে এলাকায় জেলেদের কর্মকাণ্ডের তথ্য জানা নেই। যদি এ ধরনের অপকর্ম কেউ করে কিংবা বন বিভাগের কেউ জড়িত থাকে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।