বেনাপোলে যানজটে ব্যাহত আমদানি-রফতানি, ভোগান্তি যাত্রীদেরও

বাংলাদেশের বৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলের স্বাভাবিক কার্যক্রমের গতি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাহত হচ্ছে যানজটের কারণে। আমদানি করা মালামাল রাখা হচ্ছে রাস্তার পাশে। পণ্যবাহী ট্রাক শুধু নয়, যানজটের কারণে ভুগতে হচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতকারী সৌহার্দ্য বাসের যাত্রীদেরও। অভিযোগ রয়েছে,  ট্রাফিক ব্যবস্থাও যথেষ্ট কার্যকর নয় বন্দরের সড়কে। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যানজট নিরসনে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হলে অনেকাংশে নিরসন হবে যানজট সমস্যার।Benapole Port picture 11-09-2018

বেনাপোলের যানজটের কারণে সময় মতো পণ্য পরিবহন সম্ভব হচ্ছে না। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিল্প-কারখানার উৎপাদন। প্রতিদিন আটকে থাকছে পণ্যবোঝাই শত শত ট্রাক। ঢাকা-কোলকাতা মহাসড়কের বেনাপোলে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় এই যানজটের। প্রতি বছর বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সরকারের ছয় থেকে সাত হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়। তারপরও স্থল বন্দরটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন অপর্যাপ্ত।

আগে যেখানে প্রতিদিন ভারত থেকে চারশ থেকে পাঁচশ পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করত, এখন সেখানে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২০টি পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করছে। হাজারও ট্রাকের চেসিসসহ আমদানি-রফতানি করা পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরের প্রধান সড়কের ওপরে রাখায় বাড়ছে যানজট ও পণ্যজট।

বন্দর থেকে আমদানি পণ্য খালাস করা নিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক ও ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতকারী যাত্রীবাহী সোহার্দ্য পরিবহনগুলো যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে। এতে চাপ পড়ছে ফুটপাথেও। কারণ রাস্তার যানজট এড়াতে ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলের মতো বাহনগুলো ফুটপাতের ওপর দিয়ে চলাচল করে।

ট্রাকচালকদের অভিযোগ, বন্দরের জায়গার স্বল্পতা এই যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ। এখানে নেই পর্যাপ্ত  ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘বন্দরের ধারণক্ষমতা ৪৪ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু এখানে সার্বক্ষণিক আমদানি পণ্য থাকে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি। বন্দরে স্থান সংকটের কারণে আমদানি পণ্য নিয়ে খালাসের অপেক্ষায় ট্রাকগুলো দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকছে। এতে আমদানিকারকরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়ে কেউ কেউ এ পথে আমদানি বন্ধ করে দিচ্ছেন।’

বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, যানজট নিরসনে তারা জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার তাদের বৈঠক হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শেষ হলে অনেকাংশে নিরসন হবে যানজট সমস্যার।