খড়ের গাদায় আগুন, মামলার ভয়ে এলাকা পুরুষশূন্য!

পুড়ে যাওয়া খড়ের গাদা

জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সুজন কবিরাজ নামে এক ব্যক্তির খড়ের গাদায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলার ভয়ে এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ ইউনিয়নের উত্তর কুমারিয়া জোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সুজন নিজে তার খড়ের গাদায় আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় দিনেশ বারুইয়ের একটি জমি সুজন অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয়রা একাধিকবার সালিশ বৈঠক করে ওই জমি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। এতে সে এলাকাবাসীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়। শুক্রবার ওই জমির মালিক লোক নিয়ে জমিতে গেলে সুজনের স্ত্রী তাদের ওপর চড়াও হয়। পরে সবার সামনে সে তার খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং হাতের শাখা ভেঙে ফেলে। এ ঘটনায় মিথ্যা মামলায় হয়রানি হওয়ার ভয়ে এলাকার পুরুষরা আত্মগোপনে চলে যায়।

ওই গ্রামের শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র মিস্ত্রি ও পিনাক মুখার্জি জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সুজন নিজের খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে এলাকাবাসীকে হয়রানি করার হুমকি দিয়েছে। তাই শুক্রবার রাতে এলাকার পুরুষরা বাড়িতে না ঘুমিয়ে পালিয়ে ছিল। সকালে আবার এলাকায় ফিরে প্রতিবাদ করেছে। সুজন এর আগেও নিজের মাছের ঘেরের আগুন দিয়ে এলাকার অনেকের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল।

গৃহিণী মিনতি মিত্র জানান, সুজনের মামলার ভয়ে তাদের বাড়ির পুরুষরা রাতে বাড়িতে ঘুমায়নি। এতে সারারাত তারা আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন।

পঞ্চকরণ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য জলিল খান জানান, ঘটনাটি ন্যক্কারজনক। সুজন এলাকাবাসীকে হয়রানি করতে প্রকাশ্যে নিজের খড়ের গাদায় আগুন দিয়েছে।

এ বিষয়ে পঞ্চকরণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজ্জাক মজুমদার বলেন, এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সব কাগজপত্র দেখে একাধিকবার ওই জমিটি নিয়ে সালিশ বৈঠক করা হয়েছে। কিন্তু সুজন কোনও কিছুই মানতে চায় না। সে এলাকাবাসীকে হয়রানি করতে স্থানীয়দের সবার সামনে তার খড়ের গাদায় আগুন দিয়েছে। তার মিথ্যা মামলার ভয়ে গত রাতে এলাকার পুরুষরা অন্যত্র পালিয়ে ছিল। শনিবার তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) ঠাকুর দাস মণ্ডল জানান, অভিযোগ পেয়ে শনিবার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ওই খড়ের গাদায় আগুন দেওয়া হয়েছে বলে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।