সোমবার ভোর ৬টায় নিজ নিজ কর্মস্থলে না গিয়ে পাটকলের শ্রমিকরা আন্দোলনের সপ্তম দিনে এ কর্মসূচি পালন করে। সকাল ১০টায় খালিশপুর ক্রিসেন্ট জুট মিল প্রশাসনিক ভবনের সামনে শ্রমিকরা সমবেত হয়। সেখানে এক সমাবেশের আয়োজন করে শ্রমিক নেতারা।
এর আগে রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় ক্রিসেন্ট, প্ল্যাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, আলীম, ইস্টার্ন, কার্পেটিং ও জেজেআই’র শ্রমিকরা থালা হাতে নিয়ে নিজ নিজ মিল গেটে সমবেত হয়। পরে বিকাল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নতুন রাস্তা মোড়, আটরা ও রাজঘাটের খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবস্থান করে শ্রমিকরা। সেখানে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাজপথ রেলপথ অবরোধ কর্মসূচী পালন করে।
শ্রমিকনেতা মুরাদ হোসেন জানান, প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটখাতকে সব চক্রান্তের হাত থেকে রক্ষা করে এসেছেন। আগামী দিনেও রক্ষা করবেন। শ্রমিকরা বকেয়া না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যহত রাখবে।’
সিবিএ নেতা সোহরাব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রমিক বান্ধব না খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের বন্ধ হওয়া পাটকল চালু করতেন না। তবে বর্তমান পাটখাতকে ধ্বংস করতে ব্যক্তি মালিকানা গ্রুপের একটি চক্র ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধুর গড়া এ পাটকল ও শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি। তবে প্রধানমন্ত্রী পাটকলের বিষয় অবগত হয়েছেন বলে বিজেএমসির একটি সূত্র জানিয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, পাটখাত প্রয়াজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি-বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশাধ, চাকুরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুর্নবহাল, সব মিল সটআপের অনুকূল শ্রমিক-কর্মচারীদের শুন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ ও স্থায়ীকরণসহ ৯ দফা দাবিতে শ্রমিকরা ১৩ মার্চ থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ৭ এপ্রিল বিজেএমসি থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া মজুরী ও বেতন প্রদান ও ১৮ মের মধ্যে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর শ্রমিকরা অবরোধ ও করমবিরতী স্থগিত করে কাজে যোগ দেয়। ২৫ এপ্রিল এসে এক সপ্তাহ সময় নেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। এরপর ২ মেও মজুরি না দেওয়ায় ৫ মে থেকে মিলে উৎপাদন বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন শুরু করে। ঢাকায় শ্রমিক নেতাদের বৈঠকের ঘোষণা অনুযায়ী ১৩ মে থেকে সারাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে এ কর্মসূচি একযোগে পালন করবে।