পতিত জমিতে ধান চাষ করে নিজেই কাটলেন পুলিশ সুপার

1

১৪ মাস আগে নড়াইলে যোগদান করেন পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন পিপিএম। যোগদানের পর থেকে পেশাগত কাজে সুনাম ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছেন তিনি। পুলিশের খুলনা বিভাগীয় রেঞ্জ পর্যায়ে নড়াইলকে সর্বপ্রথম মাদকমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষনার লক্ষ্যে মাদকবিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে। কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ এ বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক- সেবা (পিপিএম) পেয়েছেন তিনি। এবার পেশাগত কাজের বাইরে প্রশংসামূলক উদ্যোগ নিয়ে আলোচনায় তিনি।

প্রায় ৩ মাস আগে জেলা পুলিশ লাইন্সের ২০ শতাংশ পতিত জমিতে বোরো ধান লাগান পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন পিপিএম। ধান লাগানোর পর এটি নিয়মিত পরিচর্যাও অব্যাহত রাখেন। সেই বোরো ধান পেকে সোনালী রূপ ধারণ করেছে। এসেছে ধান কাটার পালা। মঙ্গলবার (১৪ মে) পুলিশ সুপার নিজে কাস্তে হাতে নিয়ে পাকা ধান কাটতে শুরু করেন। ধান কাটা শেষ হলে সে ধান মাড়াইও করেন নিজে। এ সময় পুলিশ সুপারের সঙ্গে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে সহযোগিতা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরফুদ্দিন, পুলিশ সুপারের ছেলে যশোর ইংলিশ স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাইজুম সালেহীন সামির ও মেয়ে নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিহা মুবাশ্বিরা রোজ, পুলিশ লাইন্স স্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দ।

2

পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন পিপিএম বলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশ লাইন্সের অনাবাদি ২০শতাংশ জমিতে বোরো ধান রোপন করি। এ জমি গত ৩০ বছর যাবত অনাবাদি পড়ে ছিল। পুলিশ লাইন্সের কোনও জমি যাতে অনাবাদি ও পতিত অবস্থায় পড়ে না থাকে সে লক্ষ্যে জমিতে ধান চাষাবাদ করেছি। কৃষিকাজে আন্তরিকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সাময়িকভাবে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে অংশগ্রহণ করানো হয়।

জসিম উদ্দিন আরও বলেন, কোনও কাজ অবহেলা বা অবজ্ঞার নয়। এর আগে পতিত জমিতে শাক সবজির চাষাবাদ ও বৃক্ষরোপণ করেছি।

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ চিন্ময় রায় বলেন, কৃষি বান্ধব পুলিশ সুপারের এ ধরনের কাজকে স্বাগত জানাই। তার এ কাজ অন্যদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জোগাবে।

পুলিশ লাইন্স সূত্রে পুলিশ সুপারের আরও বেশ কিছু উন্নয়নমূলক উদ্যোগের কথা জানা গেছে। ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সুপার হিসেবে নড়াইলে যোগদানের পর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রজাতির ৫শ’ আম গাছ লাগিয়েছেন। পুলিশ লাইন্স পুকুর, ট্রাফিক অফিস পুকুর এবং পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পুকুরে গত বর্ষা মওসুমে রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ১৩ হাজার মাছের পোনা অবমুক্ত করেছেন। চাষ করা এ মাছ পুলিশ লাইন্সের সদস্যরা বিনামূল্যে খেয়ে থাকেন। এ ছাড়া পুলিশ সুপারের বাসভবন সংলগ্ন ৩০ বছরের নর্দমা পরিষ্কার করে পুলিশ মৎস্য অ্যাকুরিয়াম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে তার উদ্যোগে।