জানা যায়, দক্ষিণ এশিয়ায় বৃহৎ পরিসরে একাঙ্গির চাষ করা হয়। থাই ও চাইনিজ রান্নাতে এটি বেশি ব্যবহার করা হয়। এর পাতা পুরু ও গোলাকৃতি, মাটির সঙ্গে লাগানো অবস্থায় থাকে। ক্ষুদ্র রাইজোম থেকে বসন্তকালে নতুন পাতা বাড়তে শুরু করে। গ্রীষ্মকালে একটি বা দু’টি ফুল হয়। দুই মাস পর্যন্ত ফুল ফোটে। পাতা হেমন্তে মরে যায় এবং রাইজোম শীতকালে সুপ্ত অবস্থায় চলে যায়। শুকনো বা তাজা রাইজোম মসলা হিসেবে এশীয় ও চাইনিজ রান্নাতে ব্যবহৃত হয়। মৎস্য শিকারের চার তৈরি ও ওষুধ তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়। একাঙ্গি চাষ করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হয়।
মাগুরা মসলা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক ড. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আট মাস আগে একাঙ্গির আবাদ শুরু করি। সাধারণত এর জীবনকাল ২৭০ থেকে ২৮০ দিন। এর পরই একাঙ্গি ঘরে তোলা যাবে। সাধারণত প্রতি হেক্টর জমিতে সাত-আট মেট্রিক টন একাঙ্গি উৎপাদিত হয়। পরীক্ষামূলক উৎপাদনে বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে। সাধারণত প্রতিমণ একাঙ্গি বাজারে আট থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। একজন কৃষক প্রতি হেক্টর জমি থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন; যা অন্য কোনও শস্য উৎপাদনে সম্ভব নয়।’
ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ হেল কাফি বলেন, ‘একাঙ্গিতে রয়েছে অত্যন্ত ঔষধি গুণ। এটি ফেনোল কম্পাউন্ডের কাজ করে, যা শরীরে সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। এটি মানুষের প্রোটিনের অভাব পূরণ ছাড়াও গ্যস্ট্রিক, চর্ম ও ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিবারণে অত্যন্ত কার্যকরী।’
মাগুরার প্রকৃতি ও কৃষিবিষয়ক বেসরকারি সংস্থা ‘পল্লী প্রকৃতি’র নির্বাহী পরিচালক শফিকুর রহমান পিন্টু বলেন,‘একাঙ্গি চাষ মাগুরার কৃষিতে বিপ্লব বয়ে আনবে। এটি যেমন কৃষকদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আনতে পারে, তেমনি পরিকল্পনা মাফিক এগোলে, এখান থেকে একাঙ্গি রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও সম্ভব।’