বাগেরহাটে কবরস্থানের ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগে প্রতিবাদ সভা

কবরস্থানের ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের প্রতিবাদ করেন এলাকাবাসীবাগেরহাটের মোল্লাহাট এলাকায় একটি কবরস্থানের ওপর দিয়ে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদের এক সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শনিবার (১৩ জুলাই) বিকালে মোল্লাহাটের আড়ুয়াডিহি স্কুলের মাঠে প্রতিবাদ সভা করেছেন কবরস্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত গ্রামগুলোর মানুষ। তাদের অভিযোগ, আডুয়াডিহি ও এর আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের অনুদান ও ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত বহু পুরানো এই কবরস্থানের জমির একটি অংশ দখলের পায়তারা করতে এ রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে।

প্রতিবাদকারীরা জানান, গ্রামের দুটি অংশের সংযোগের জন্য পাশে একটি পুরানো রাস্তা থাকার পরও জেলা পরিষদ সদস্য ওলিউজ্জামান একক সিদ্ধান্তে এ রাস্তা তৈরি করছে। কোনও নিয়ম না মেনে জেলা পরিষদের বরাদ্দ থেকে একেবারে বিনাপ্রয়োজনে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এ রাস্তার একটি অংশ বেশ কয়েক একর কৃষি জমির ওপর দিয়ে এবং আরেকটি অংশ কবরস্থানের ওপর দিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবাদকারীদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান, আরিফ শেখ ও আকবর হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এই কবরস্থানে তাদের বাপ-দাদার কবর রয়েছে। স্থানীয় কোনও মানুষ মারা গেলে তার কবর এখানেই দেওয়া হয়। কিন্তু ওলিউজ্জামান কবরস্থানকে বিভক্ত করে একটি অংশ দখল করার জন্য এই রাস্তা তৈরি করছে। এলাকার কয়েকজন মৌখিকভাবে নিষেধ করলে প্রথমে তিনি তা তোয়াক্কা করেননি; বরং তার অনুসারীদের দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। তবে সঙ্গবদ্ধভাবে অনেকে কবরস্থানে গেলে শ্রমিকরা সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ করে রেখেছে। সুযোগ বুঝে তারা আবারও রাস্তাটি নির্মাণ করতে পারে। তাই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে রাস্তায় নেমেছেন। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছেন।

কবরস্থানের ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের প্রতিবাদ করেন এলাকাবাসীএ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগেরহাট জেলা পরিষদের সদস্য ওলিউজ্জামান বলেন, ‘আমার দাদাই এই কবরস্থান নির্মাণ করেছিলেন। কবরস্থানটিতে যাওয়ার কোনও রাস্তা না থাকায় এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তাটি নির্মাণের চেষ্টা করছি।’
এ বিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ওসমান শেখ জানান, স্থানীয় মানুষ যেহেতু চাচ্ছেন না, এ জন্য তাকে রাস্তা তৈরি করতে নিষেধ করা হয়েছে।

চিতলমারী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান এস এম মাহাতাবুজ্জামান প্রতিবাদ সভার শুরুর দিকে কিছুসময় উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘গ্রামবাসী যেহেতু রাস্তা তৈরির বিরোধীতা করছেন, তাই এ রাস্তা হবে না। ওলিউজ্জামান সাহেবও বলেছেন তিনি রাস্তাটি তৈরি করবেন না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগেরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ কামরুজ্জামান টুকু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কবরস্থানে প্রবেশের রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কারও ব্যক্তিগত লাভালাভের বিষয় আছে বলে আমার জানা নেই। আর এলাকাসীর যদি আপত্তি থাকে তাহলে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।’