পোকার আক্রমণে মরেছে শত শত গাছ, ঘটছে দুর্ঘটনা

পোকার আক্রমণে মরে যাওয়া গাছসাতক্ষীরার কয়েকটি সড়কের পাশে থাকা শত শত রেইন ট্রি ও শিশু  গাছ পোকা আক্রমণে মরে গেছে। ঝড়-বৃষ্টি ও বাতাস হলে এসব গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ে পথচারীরা আহত হচ্ছেন। স্থানীয়রা দুর্ঘটনা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মরা গাছগুলো কেটে নেওয়ার আহ্বান জানালেও কোনও উদ্যোগ এখনও দেখা যায়নি।

সাতক্ষীরা সদর-দেবহাটা-কালিগঞ্জ-শ্যামনগর এবং সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় রেইন ট্রি, শিশু ও বাবলার গাছ লাগায়। এছাড়া সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগ জেলার বিভিন্ন সড়কে তাদের জায়গায় শিশু ও রেইন ট্রি লাগায়। এসব গাছের বয়স ৩০ বছরের বেশি হওয়ায় জায়ান্ট মিলিবাগ পোকার আক্রমণে ছোট-বড় শত শত গাছ মারা যাচ্ছে।

পোকার আক্রমণে মরে যাওয়া গাছদেবহাটা উপজেলার গাজীরহাটা এলাকার দীপঙ্কর বিশ্বাস বলেন,কয়েক বছর ধরে সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়কের পাশে বড় বড় শিশু গাছ এবং রেইন ট্রি জায়ান্ট মিলিবাগ পোকার আক্রমণের ফলে মরে শুকিয়ে গেছে। মরা গাছের ডাল ভেঙে পড়ে প্রতিনিয়ত পথচারীরা আহত হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে পারুলিয়া গরুর হাট এলাকায় ডাল ভেঙে কয়েকজন স্কুল ছাত্রী আহত হয়। গাজীরহাট এলাকায় ডাল ভেঙে একজন মোটরসাইকেল আরোহী আহত হন। এই গাছগুলো এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কিন্তু মরা গাছগুলো অপসারণে কর্তৃপক্ষের কোনও উদ্যোগ নেই। এছাড়া গাছগুলো পচে নষ্ট হওয়ার ফলে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

পোকার আক্রমণে মরে যাওয়া গাছএকই উপজেলার কুলিয়া এলাকার রুহুল আমিন বলেন, জায়ন্ট মিলিবাগ পোকা নরম গাছগুলোতে বেশি আক্রমণ করে। শিশু ও রেইন ট্রি গাছ নরম হওয়ায় পোকা ব্যাপক হারে আক্রমণ করেছে।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, জায়ান্ট মিলিবাগ পোকারা ছিদ্রকার ও শোষক। মুখোপাঙ্গ থাকায় এরা উদ্ভিদ থেকে রস শোষণ করে। সাতক্ষীরা সদরসহ বিভিন্ন সড়কের পাশের গাছগুলোতে ব্যাপক হারে এ পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। পোকার আক্রমণে মরে যাচ্ছে শত শত গাছ। জায়ান্ট মিলিবাগের হাত থেকে গাছ রক্ষার জন্য জৈব বালাইনাশক, ফাইটোক্লিন দিয়ে দেওয়া যেতে পারে।

পোকার আক্রমণে মরে যাওয়া গাছসাতক্ষীরা সামাজিক বনায়ন নার্সারি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিএম মারফ বিল্লাহ বলেন, ‘সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ-শ্যামনগর সড়কে বনবিভাগ ও সড়ক জনপথের গাছগুলো শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। আমাদের দুই শতাধিক গাছ মারা গেছে। কোন রোগে মারা যাচ্ছে সেটা আমাদের জানা নেই। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে জানাবেন কী কারণে গাছগুলো মারা যাচ্ছে। মরে যাওয়া গাছগুলো কাটার জন্য উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের মাধ্যমে টেন্ডার করে গাছগুলো দ্রুত কাটা হবে।’

পোকার আক্রমণে মরে যাওয়া গাছসাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘সাতক্ষীরার বিভিন্ন সড়কের পাশে ৬০-৭০টি মারা গেছে। আমরা সরাসরি গাছ কাটতে পারি না। এই বিষয়টি আরবরি কালচার বিভাগ দেখভাল করে। তাদের মাধ্যমে জরিপ করা হয়েছে। খুব দ্রুত গাছগুলো কেটে সেখানে নতুন চারা রোপণের উদ্যোগ নেবো।’