বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের ভোগান্তির অভিযোগ

হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের রক্ত পরীক্ষার জন্য ডাক্তাতের সিল দেওয়া স্লিপ দিয়ে বিভিন্ন প্যাথলজিতে পাঠানো হয়

সারাদেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর অবস্থানে থাকলেও বাগেরহাট সদর হাসপাতালের চিত্র ভিন্ন। চিকিৎসকসহ দালালদের কাছে জিম্মি হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা না করে তাদের পাঠানো হয় শহরের বিভিন্ন প্যাথলজিতে। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে তারা হিমসিম খাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর স্বজরা। অন্যদিকে সচেতন মহল মনে করছে, সরকারি হাসপাতালে রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগকে আরও আন্তরিক হতে হবে।

বাগেরহাট সদর উপজেলার খানজাহান আলী মাজার এলাকার ভূমিহীন আনিছ খানের ছেলে ডেঙ্গু আক্রান্ত মো. রবিউলকে (১১) সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা ভর্তি না করে রক্ত পরীক্ষা করে আনতে বলেন। এসময় সরকারি হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা না করে, তাকে ডা. মারুফুজ্জামানের সিলযুক্ত একটি কাগজ দিয়ে শহীদ মিনার এলাকার একটি প্যাথলজিতে পাঠান হয়। ওই প্যাথলজিতে রক্ত পরীক্ষা করানোর পর তার ছেলেকে দ্রুত সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের রোগীদের রক্ত পরীক্ষার জন্য দেওয়া স্লিপ

ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ায় সদর উপজেলার পার-নোয়াপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক এমদাদুলের ছেলে আব্দুল্লাহকে (৯) সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকেও রক্ত পরীক্ষার জন্য ওই বিশেষ প্যাথলজিতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় বলে তার মা অভিযোগ করেন।

ওই শিশুর মা বলেন,‘বাড়িতে স্বামী জ্বরে ভুগছেন। এদিকে ছেলে হাসপাতালে ভর্তি। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। হাসপাতাল থেকে কোনও খাবারও দেওয়া হয় না। তার ওপর টাকা দিয়ে কিভাবে বার বার রক্ত পরীক্ষা করবো।’

দেপাড়া এলাকার ওমর আলীর ছেলে রোহান (১০) ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে তাকে সদর হাসপতালে ভর্তি করা হয়। রোহানের মা মাহমুদা বেগম বলেন,‘তারাও বাইরের একটি প্যাথলজি থেকে ৪শ টাকা দিয়ে রক্ত পরীক্ষা করেছেন।

এছাড়াও অন্য ডেঙ্গু রোগীর স্বজন একই অভিযোগ করে বলেন, তাদেরও বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষা করার জন্য স্লিপ দেওয়া হয়েছে।

বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ল্যাব সহকারী সমির রঞ্জন কুন্ডু বলেন, ‘শুধুমাত্র সরকারি টিকিট নিয়ে আসলেই সরকারি প্যাথলজিতে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। কেউ যদি রক্ত পরীক্ষার জন্য কোনও প্যাথলজির নাম লিখে দেয়, সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।’ তবে হাসপাতালে একটি দালাল চক্র আছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

এবিষয়ে বাগেরহাটের খানজাহান আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক হায়দার আলী বাবু বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পরীক্ষা হাসপাতালের প্যাথলজিতে হওয়া উচিত। এবিষয়ে সরকারিভাবে আরও নজরদারি প্রয়োজন।’

তবে এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. মো. ফয়জুর রহমান। তিনি এ ব্যাপারে রবিবার সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।