আবরারের মায়ের কান্না এখনও আমার কানে ভাসে: হানিফ

ফকির লালন শাহের ১২৯তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন মাহবুব উল আলম হানিফ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘লালন শাহের সব অনুষ্ঠানে আমি আসি। কিন্তু আজ আমি এখানে এসেছি অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয়ে। আবরারের মায়ের কান্না এখনও আমার কানে ভাসে। ছেলে হারানোর কষ্ট তিনি কীভাবে সইছেন, সেটা ভাবতেই কষ্ট লাগে। মত বা চিন্তার বিরুদ্ধে গেলেই তাকে হত্যা করতে হবে, এমন মানুষ চাই না।’ বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১২৯তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আবরার মেধাবী ছিল, তাকে যারা হত্যা করেছে, তারাও মেধাবী। এটা পরিষ্কার, পাঠ্যবই পড়লেই প্রকৃত মানুষ হওয়া যায় না। ফকির লালন শাহের কোনও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তারপরও তার চিন্তা-চেতনা ও দিক-নির্দেশনা অনুসরণীয়। লালন শাহ সত্য কথা বলতে ও সুপথে চলতে বলেছেন। সেটা বুকে ধারণ করলে হানাহানি হবে না। জীবনদর্শনে লালনের যে উপলব্ধি, ভাবনা ও উপদেশ, তা মানুষের জন্য বড় প্রয়োজন।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানুষ। আমরা চাইলে একে অপরের পরিপূরক হতে পারি। কিন্তু আমরা কখনো নিজের মনকে বুঝি না। নিজের স্বার্থ নিয়ে ভাবি। আজ সমাজের এই হানাহানি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে লালনের সেই দর্শন মানতে হবে। মানবধর্ম আমাদের মূল ধর্ম।’

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আসলাম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সংসদ সদস্য আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিস, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভির আরাফাত, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান, কুষ্টিয়া জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী প্রমুখ। পরে উন্মুক্ত লালন মঞ্চে লালন সংগীত পরিবেশন করেন লালনের শিল্পীরা।