দুবলার চরের শুঁটকি থেকে আসবে ৩ কোটি টাকা

দুবলার চরে আসছেন জেলেরাসুন্দরবনের দুবলার চরে শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকে ৫ মাসব্যাপী শুঁটকি মৌসুম শুরু হয়েছে। নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ মৌসুম চলবে মার্চ পর্যন্ত। সাগর থেকে মাছ আহরণের পর দুবলার চরে এনে শুঁটকি বানান জেলে-মহাজনেরা। এরইমধ্যে জেলে-মহাজনরা চরে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে থাকার অস্থায়ী ঘর, মাছ সংরক্ষণের গুদাম ও মাচা তৈরি করছেন তারা। বন বিভাগ এবার দুবলার চর থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের টার্গেট নির্ধারণ করেছেন। পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন,  ঝড়-জলোচ্ছ্বাস না হলে টার্গেট তিন কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। 

দুবলার চরবঙ্গোপসাগর তীরবর্তী পূর্ব সুন্দরবনের দুবলার চরে এই শুঁটকি পল্লির অবস্থান। প্রতি বছর দুবলার চরের আওতাধীন আলোরকোল, নারকেলবাড়িয়া, শেলারচর ও মেহের আলীর চরে শুঁটকির কারবার হয়। জেলে-মহাজনেরা বন বিভাগের দুবলা অফিসে নির্ধারিত হারে রাজস্ব জমা দিয়ে পাস নিয়ে মাছ আহরণ ও শুঁটকি বানানোর কাজ করেন।

দুবলার চরে আসছেন জেলেরাচরে কাঠ বা বাঁশের মাচার ওপর মাছ রেখে রোদে শুকিয়ে শুঁটকি করা হয়। বিশেষ করে শীত মৌসুমেই চলে শুঁটকির এ কারবার। তবে কুয়াশার জন্য এ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ফলে ব্যবসায়ীদের অনাঙ্ক্ষিত ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

বন কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির জন্যই এবার গতবারের তুলনায় বেশি বেশি সংখ্যক জেলেদের মৎস্য আহরণ ও শুঁটকি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ মৌসুমে দুবলার চরে ১২ জন বহদ্দারকে (মহাজন) পাস দেওয়া হয়েছে। গতবার দেওয়া হয়েছিল ১১ জনকে। এছাড়া জেলেদের জন্য ২৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের ১ হাজার ৪০টি ঘর তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গতবার এর সংখ্যা ছিল ৯০৮টি। জেলে-মহাজনদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য ৫৩টি ডিপোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গতবার ছিল ৪৮টি। এছাড়া  ওষুধ, সেলুন, মুদি দোকান ও হোটেলের জন্য ৯০টি দোকান করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গতবার এর সংখ্যা ছিল ৭০টি।

দুবলার চরে আসছেন জেলেরাতিনি আরও জানান, গত মৌসুমে দুবলার চর থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। চলতি মৌসুমে টার্গেট করা হয়েছে ৩ কোটি টাকা।

দুবলার চরে আসছেন জেলেরা

বন কর্মকর্তা বলেন, গত বছরের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে বনদস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। এরপর থেকে সুন্দরবনে দস্যুদের তৎপরতা কমে যায়। গত বছরই শুঁটকি খাত থেকে রাজস্ব আদায় বেড়ে যায়। দস্যুতা কমে যাওয়ায় এবার সহস্রাধিক জেলে নির্বিঘ্নে মাছ আহরণ ও শুঁটকি তৈরি করতে পারবেন। এতে বন বিভাগের আয়ও বাড়বে।