নতুন জাতের ধান বিনা-২০ চাষে সাফল্য

বীনা-২ জাতের ধান কাটছেন মাগুড়ার কৃষকরা

জিংক এবং আয়রন সমৃদ্ধ বিনা-২০ জাতের ধান চাষে দারুন সাফল্য পেয়েছেন মাগুরার বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা উপকেন্দ্রের (বিনা) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। মাগুরা উপকেন্দ্রে এই ধানের প্রথম পরীক্ষামূলক উৎপাদন সফল হয়েছে।

বিনা সূত্রে জানা যায়, বিনা-২০ জাতের ধান অত্যন্ত স্বাস্থ্য সম্মত। প্রচলিত আমনের সঙ্গে এর মূল পার্থক্য হলো, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জিংক এবং আয়রন। এছাড়া অন্য ধানের মত কার্ব-হাইড্রেড ও ফ্যাটও আছে। এ ধান উৎপাদনে সার এবং সেচের প্রয়োজন প্রচলিত আমনের তুলনায় খুবই কম। এ জাতের ধানে পোকা-মাকড়ের আক্রমণও কম হয়। তাই কীটনাশকের প্রয়োজন নেই বললেই চলে। বিনা-২০ জাতের ধান থেকে উৎপাদিত চাল শুধু ভাত নয়, চিড়া, মুড়ি, খই ও পিঠা তৈরিতেও সহায়ক। সবচেয়ে বড় কথা এ জাতের চাল খুবই সুস্বাদু।

বিনা মাগুরা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সুশান চৌহান জানান, মূলত ২০১৭ সালে বিনার মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আবুল কালাম আজাদ বিনা-২০ জাতের বীজটি উদ্ভাবন করেন। ভিয়েতনামের রেডরাইজ ধানের বীজের সঙ্গে বাংলাদেশের বীনাশাইল ধানের বীজের সংমিশ্রনে এ শংকর জাতের বীজ তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশ বীজ বিভাগ ২০১৭ সালেই এ ধানের বাণিজ্যিক চাষের অনুমোদন দেয়।  বিনা মাগুরা উপকেন্দ্র এবছর প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করে। পরীক্ষামূলকভাবে মাগুরায় ১০ বিঘা জমিতে এ ধানের চাষ করা হয়। এর ফলন বিঘা প্রতি গড়ে ২০ মন করে হয়েছে। সাধারণ জাতের আমনের জীবনকাল ১২০ দিন হলেও এটি ১১০ দিনেই ঘরে তোলা যায়।

সুশান চৌহান বলেন, ‘আমরা এবারই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে বিনা-২০ ধানের চাষ শুরু করছি এবং তা অত্যান্ত সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এটি যেমন স্বাস্থ্যকর তেমনি স্বল্প খরচে স্বল্প সময়ে উৎপাদন সম্ভব। আশা করছি মাগুরাসহ এ অঞ্চলের কৃষকদের কাছে এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে।

মাগুরা মেডিক্যার কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহেল কাফি বলেন, ‘জিংক এবং আয়রন মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। বিশেষ করে শিশু ও নারীদের মধ্যে এ উপাদান দুটির স্বল্পতা দেখা যায়। মূলত উপাদান দুটির অভাবে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যদি চালের মাধ্যমে এ উপাদানের অভাব দূর করা যায়। তা হলে অবশ্যই বিনা-২০ মা ও শিশু স্বাস্থ্যের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।