হত্যা মামলায় চার জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় স্কুল শিক্ষক মুজিবর রহমান ও তার ভাইকে হত্যার দায়ে চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এই মামলার ৭ আসামিকে যাবজ্জীবন ও ১ আসামিকে ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন। রবিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে জেলার নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান তিন বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে কমল হোসেন মালিথা, ফকিরাবাদ গ্রামের কাবুল প্রামাণিকের দুই ছেলে কামরুল প্রামাণিক ও সুমন প্রামাণিক, একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নয়ন শেখ (পলাতক)। 

এ ছাড়াও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, উপজেলার ফকিরাবাদ গ্রামের ছের আলীর দুই ছেলে নজরুল শেখ ও আবদুল রহিম ওরফে লালিম শেখ, আকুল মণ্ডলের ছেলে মাহফুজুর রহমান ওরফে কবি, বেনজির প্রামাণিকের ছেলে হৃদয় আলী (পলাতক), নাজির প্রামাণিকের ছেলে সম্রাট আলী প্রামাণিক (পলাতক), গোলাপনগর গ্রামের মৃত নুরুল হক মালিথার ছেলে জিয়ারুল ইসলাম ওরফে সিহাব মালিথা ও আশরাফ মালিথা। তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার আরেক আসামি গোলাপনগর এলাকার আরিফ মালিথাকে ১০ বছর কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মামলার বিবরণীতে জানা গেছে, মুজিবর রহমানের বড় ছেলে আশরাফুজ্জামান রতন আলীর মেয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে আরিফ মালিথা প্রায়ই উক্ত্যক্ত করতো। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে স্থানীয় মসজিদে এশার নামাজ পড়ে মুজিবর রহমানসহ তার ভাই ও ছেলেরা বাড়ি ফিরছিলেন। পথে আসামিরা মুজিবর রহমান ও তার ভাই মিজানুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মুজিবর রহমান মারা যান। স্থানীয় ব্যক্তিরা তার ছোট ভাই মিজানুর রহমানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও পরে রাজশাহীতে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনার পর মুজিবর রহমানের ছেলে জাকারুল ইসলাম বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত করে আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র জমা দেয়।

কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আবদুল হালিম বলেন, ‘নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পেয়েছে।

মামলার বাদী জাকারুল ইসলাম বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এখন দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানচ্ছি।’