সৌদি আরবে গৃহকর্মীর মৃত্যু: খুলনায় মানবপাচার আইনে মামলা

সৌদি আরবে নিহত খুলনার গৃহকর্মী আবিরনসৌদি আরবে গৃহকর্মী আবিরনের মৃত্যুর ঘটনায় খুলনায় মানবপাচার আইনে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা আনসার সরদার বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) পাইকগাছা থানায় মানবপাচার আইনে মামলা করেছেন। মামলায় চার জনকে আসামি করা হলেও এখনও কাউকে আটক করেনি পুলিশ।

মামলার আসামিরা হলেন−এস এম ফাতেমা এমপাওয়ারমেন্ট সার্ভিসের জাহিদুল ইসলাম, এম এস এয়ারওয়ে ইন্টারন্যাশনালের রিক্রুটিং সার্ভিসের নুর মোহাম্মদ, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ঢাকার কর্মকর্তা নিপুল চন্দ্র গাইন ও তালা উপজেলার দালাল রবিউল ইসলাম।

পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমদাদুল হক শেখ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মামলায় প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে নেওয়া, শর্ত অনুযায়ী চাকরি না দেওয়া, সেখানে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) অখিল রায় জানান, ২০১৭ সালে ঢাকার দুটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে পাইকগাছার রামনগরের আবিরনকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। এরপর থেকে আবিরন বিভিন্ন সময় ফোনে দেশে তার পরিবারকে নির্যাতনের কথা জানায়। পরে চলতি বছরের মার্চ মাসে আবিরনের মরদেহ গ্রামে আসে। এরপর গত ৫ ডিসেম্বর মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন-২০১২ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়।

নিহতের ছোট বোন রেশমা খাতুন বলেন, ‘২০১৭ সালে সৌদি আরবে যাওয়ার ১৫ দিন পর থেকে বড় বোন আবিরন যতবার ফোন দিয়েছেন ততবারই নির্যাতন, ধর্ষণের অভিযোগ করেছে। আমরা এসব বিষয় নিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেছি। আবিরনকে ফিরিয়ে আনার কথাও বলেছি। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেনি। তারা উল্টো ৭০ হাজার টাকা দাবি করে। শুনেছি আবিরনকে সেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। দেশে লাশ আনার পর তার পেটের খানিকটা মাংস বের হয়ে থাকার আলামত পাওয়া গেছে। লাশের সঙ্গে মৃত্যু সনদ ও পোস্টমর্টেম রিপোর্টও আসে। কিন্তু সেখানে মৃত্যুর সঠিক কারণ বা কোনও প্রকার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।