মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ শোধ হওয়ার নয়: কাজী নাবিল আহমেদ





যশোরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন কাজী নাবিল আহমেদমুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ কোনোভাবেই শোধ হওয়ার নয়। বঙ্গবন্ধুর ডাকে তারা যুদ্ধে গেছেন। তাদের কারণেই আজ আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস করছি, মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে পারছি।’

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে যশোর টাউন হল ময়দানের রওশন আলী মঞ্চে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আপনারা যারা এখনও লিখতে পারেন, চিন্তা করতে পারেন, স্মরণশক্তি তীক্ষ্ণ রয়েছে—তারা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা লিখে রাখুন। যারা লিখতে পারবেন না, তারা ছাত্রছাত্রীদের সহায়তায় সেগুলো লিপিবদ্ধ করার ব্যবস্থা করুন; যেন আমাদের আগামী প্রজন্ম আপনাদের বীরত্বের গৌরবগাথা সম্পর্কে জানতে পারে।’
কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘একদিন আমরা থাকবো না, নতুন রাষ্ট্রপতি হবেন, প্রধানমন্ত্রী হবেন, নতুন সংসদ সদস্য, ডিসি-এসপি হবেন। কিন্তু নতুন করে কেউ আর মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবেন না। আপনাদের বীরত্বের কাহিনি কিন্তু থাকবে, সেখান থেকে নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের কাহিনি জানতে পারবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবারের সদস্য ও অন্যরা

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জাতির জনকের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ১০ হাজার টাকা করেছেন। তাদের বাড়ি নির্মাণে সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন।’
আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী নিরলস কাজ করে চলেছেন। আপনাদের দোয়া আর সহায়তায় তিনি বাংলাদেশকে আজ পৃথিবীতে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশ আজ ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে বেশকিছু সামাজিক নিরাপত্তা সূচকে এগিয়ে গেছে।’
যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যশোর সদরের ইউএনও মুহাম্মদ ইব্রাহীম। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক, যুদ্ধকালীন মুজিব বাহিনীর জেলা প্রধান আলী হোসেন মনি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, যুদ্ধকালীন মুজিব বাহিনীর জেলার ডেপুটি প্রধান রাজেক আহমেদ, এএইচএম মুযহারুল ইসলাম মন্টু, মুক্তিযোদ্ধা কাজী আব্দুস শহীদ লাল, সাবেক সদর উপজেলা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী স্বপন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
এদিকে, আজ সকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কাজী নাবিল আহমেদ শহরের মণিহার এলাকায় বিজয়স্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি সম্মান জানান। এছাড়া জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী), জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠনসহ যশোরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন বিজয়স্তম্ভে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে।


এছাড়া সকালে যশোর শামস উল হুদা স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মনোজ্ঞ ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়।