মাছ ধরার অনুমতি নিয়ে চলছে মধু সংগ্রহ!

চলছে আগাম মধু সংগ্রহ

সাধারণত ১ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ শুরু হয়। চলে ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু এবার মৌসুমের আগেই সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবন থেকে এক শ্রেণির বনজীবী মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মাছ ও কাঁকড়া শিকারের অনুমতি (পাস) নিয়ে বনে প্রবেশ করে তারা লুকিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। অসাধু বন কর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে কতিপয় বনজীবী এ কাজ করছেন বলে জানা গেছে। যদিও বনবিভাগের দাবি টহল জোরদার রয়েছে। কারো এ ধরনের কাজ করার সুযোগ নেই।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মৌসুম শুরুর আগেই সংগৃহীত মধু ৯০০ থেকে একহাজার টাকা কেজির দরে বিক্রি হচ্ছে।

সুন্দরবন সংলগ্ন দাতিনাখালীর মোশারফ ও মীরগাং গ্রামের আলিম হোসেন জানান, মার্চের ১০-১২ তারিখের পর থেকে অসাধু চক্র সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ করছে। মাছ ও কাঁকড়া শিকারের অজুহাতে বনে যাওয়ার পর তারা সুযোগ বুঝে মধু সংগ্রহ করছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালিঞ্চি গ্রামের এক ক্ষুদে ব্যবসায়ী জানান, সুন্দরবন থেকে দু’দিন আগে নিয়ে আসা মধু তিনি কিনতে চেয়েছিলেন। প্রতি কেজির দাম এক হাজার টাকা চাওয়া হয়। তবে নিকট আত্মীয় হওয়ায় ওই ব্যবসায়ী মধু সংগ্রহকারীর নাম পরিচয় প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন।

চলছে আগাম মধু সংগ্রহ

একই গ্রামের সামছুর রহমান ও গোলাখালীর বাবু জানান, যারা মধু সংগ্রহ করছেন তারা বনকর্মীদে সঙ্গে গোপন চুক্তি করছে। এ কাজের জন্য তাদের ঘুষ দিতে হচ্ছে। এ কারণেই আপাতত মধুর দাম একটু বেশি চাওয়া হচ্ছে।

অবৈধভাবে মধু সংগ্রহের কথা স্বীকার করে মুন্সীগঞ্জ গ্রামের এক বনজীবী জানান, মাছ ধরার জন্য বনে গিয়ে ফেরার পথে একটি মৌচাক থেকে দেড়/দুই কেজি মধু এনেছেন। তবে বাকিরা কে কী করছেন সে বিষয়ে তিনি জানেন নন।

সময়ের আগে মধু সংগ্রহ করায় যথাসময়ে বনে গিয়ে আশানুরূপ মুধু মেলে না বলে দাবি করেছেন অনেক বনজীবী। কলবাড়ী গ্রামের কওছার আলী ও দাতিনাখালীর আব্দুর রশিদ, আবু জাফরের অভিযোগ, চোরা কারবারিদের কারণে নির্ধারিত সময়ে বনে গিয়ে ঠিকমতো মধু পাওয়া যায় না। বন বিভাগের কোবদকসহ কয়েকটি স্টেশনের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাযশে সংশ্লিষ্টরা বনে প্রবেশ করে আগেই প্রচুর মধু সংগ্রহ করে। এসব মধুর একটা নির্দিষ্ট অংশ সংশ্লিষ্ট স্টেশন অফিস ও টহল ফাঁড়িতে কর্মরতরা নিয়ে নিজেরা বেঁচা-বিক্রি করে। বনবিভাগ তৎপর হলে বৈধভাবে বনে প্রবেশ করে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি মধু তারা সংগ্রহ করতে পারবেন বলেও জানান তারা।

তবে সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন অফিসার আক্তারুজ্জামান জানান, টহল অনেক জোরদার করা হয়েছে। তারপরও বনবিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে কেউ এমন অপকর্ম করছে তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।