ভারতে কারাভোগ শেষে ফিরলো তাবলিগ জামাতের আরও ১৭ সদস্য

দেশে ফিরে আসা তাবলিগ জামাতের সদস্যরালকডাউনের কারণে ভারতের দিল্লিতে আটকে পড়া ২৬৫ তাবলিগ জামাত সদস্যের মধ্যে আরও ১৭ বাংলাদেশি ৫ মাস কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন। এদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ৮ নারী।

দুই দেশের হাইকমিশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে রবিবার (৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার সময় বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফেরেন তারা। ফেরত আসা তাবলিগ জামাতের সদস্যরা ঢাকার মিরপুর, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কেরানিগঞ্জের বাসিন্দা। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি মহাসিন কবির জানান, রবিবার রাত সাড়ে ৮টায় তাদের প্রশাসনিক নিরাপত্তায় যশোরের ঝিকরগাছার গাজীর দরগাহের প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তারা ১৪ দিন থাকবেন।

জানা যায়, গত মার্চ মাসে তারা পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারতে যান। ১ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ মসজিদে তাবলিগ জামাতের একটি ধর্মীয় সমাবেশ শুরু হয়। করোনা সংক্রমন ঠেকাতে ২৪ মার্চ ভারত জুড়ে লকডাউন শুরুর সময়ও সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রায় দেড় হাজার মানুষের অবস্থান ছিল। নিজামুদ্দিন মারকাজে অবস্থানরতদের অনেকের শরীরে করোনা সংক্রমন ধরা পড়ার পর মাওলানা সাদসহ তাবলিগ নেতাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অমান্যের অভিযোগে মামলাও হয়।

ভিসার নিয়ম লঙ্ঘন করায় বাংলাদেশিসহ তাবলিগ জামাতের বিপুল সংখ্যক সদস্যকে আটক করে কারাগারে পাঠায় ভারতীয় পুলিশ। বাংলাদেশি এসব নাগরিকের বিরুদ্ধে করোনা প্রাদুর্ভাবের সময় তাবলিগ জামাতে যোগ দিয়ে ভিসা শর্ত ভঙ্গ, অবৈধভাবে ধর্ম প্রচার এবং সরকারের বিধি ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়।

ভারতের তাবলিগ জামাতের প্রধান মাওলানা সাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে পুলিশ বলেছে, তিনি সামাজিক দূরত্ব ও বড় ধরনের জনসমাগম বাতিলে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা উপেক্ষা করে ভক্তদের সমবেত হতে উৎসাহ দিয়েছেন। মারকাজ নিজামুদ্দিন ভবন খালি করতে পুলিশ দুই দফা নোটিশ পাঠালেও তা শোনেননি।

এদিকে লকডাউনের সময় ভিসা নীতিমালা লঙ্ঘন করে ভারতে অবস্থান করায় বাংলাদেশিসহ দুই হাজার ৫৫০ জন বিদেশি তাবলিগ জামাত সদস্যকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগামী ১০ বছর তাদের ভারতে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার আশরাফুজ্জামান জানান, ফেরত আসা তাবলিগ জামাতের সদস্যদের প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা করেছেন। যেহেতু তারা দীর্ঘদিন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে গণজামায়াতে অংশ নিয়েছে। এছাড়া জেলেও থেকেছেন। তারা শরীরে করোনা বহন করছেন কিনা কিছুটা সন্দেহ থাকায় ১৪ দিনের জন্য সরকারি তত্ত্বাবধানে প্রাতিষ্ঠানিক সঙ্গরোধে (কোয়ারেন্টাইন) রাখা হবে। শঙ্কামুক্ত হলে ১৪ দিন পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কর্তৃপক্ষ।