পুরো ক্ষতিপূরণ না দিয়েই গাছ কাটার অভিযোগ



কেটে ফেলা গাছ                        



ক্ষতিপূরণের পুরো টাকা না দিয়েই নির্মাণাধীন মোংলা-বাগেরহাট ১৩২ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন বিদ্যুৎ লাইনের নিচের গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দরিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারগুলো প্রতিকার পেতে রবিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। 








ভুক্তভোগীরা জানান, বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের কাঠি গ্রামের কয়েকটি দরিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারের বসতবাড়ির ওপর দিয়ে মোংলা-বাগেরহাট ১৩২ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।
বছর খানেক আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি চিঠি দিয়ে মোংলা-বাগেরহাট ১৩২ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ হবে বলে তাদের জানানো হয়। সেখানে স্পষ্ট লেখা ছিল সামাজিক বনবিভাগ ও কৃষিবিভাগের মাধ্যমে স্থানীয় জমির মালিকদের ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে।
কিন্তু ভুক্তভোগীরা বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করতে আসা ব্যক্তিদের কাছ থেকে নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। সামান্য টাকা দিয়ে একের পর এক হুমকি, পুলিশ ও প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে লাইন নির্মাণ করেছে। ১৫ দিন আগে তাদের ফলন্ত গাছগুলো কেটে ফেলেছে। তারা ভেবেছিল গাছ কাটার পর সম্পূর্ণ টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু পরে কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। এমনকি বারবার সরকারি ক্ষতিপূরণের নির্ধারিত তালিকা দেখতে চাইলেও আজকাল করে তারা তা দেখায়নি।

কেটে ফেলা গাছ
ভুক্তভোগী অম্বরিশ মন্ডল বলেন, ‘আমি নিঃসন্তান। স্ত্রী অসুস্থ। সারাজীবন পরের বাড়ি নারকেল-সুপারি পেড়ে জীবন নির্বাহ করি। এখন আগের মতো শরীরে শক্তি নেই। আমার বেঁচে থাকার শেষ সম্বলও হারিয়েছে । এর তেমন কোন ক্ষতিপূরণ পাইনি।’
জগদিশ মন্ডল, গৌতম কুমার মন্ডল, সুপ্রিয়া বৈরাগি জানান, সন্তানতুল্য ফলন্ত নারকেল সুপারি গাছগুলো কেটে ফেলেছে। এটাই ছিল আমাদের আয়ের একমাত্র উৎস। গাছগুলো কেটে ফেলায় আমরা দুঃখে ভাতও খেতে পারিনি। তারপর সরকারি কাজ মনে করে সহ্য করেছি। কিন্তু আমাদের সামান্য টাকা দিয়ে বিদায় দেওয়া হয়েছে। বারবার সরকারি রেট অনুযায়ী আমাদের টাকা দিতে অনুরোধ করলেও তা কেউ শোনেনি। উল্টো আমাদের নানাভাবে হয়রানি করার হুমকি দিয়েছে।
এ বিষয়ে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রঘুনাথ কর কোনও কিছুই জানেন না বলে জানান।
যোগাযোগ করা হলে বাগেরহাট সামাজিক বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) আবুল কালাম জানান, সরকারি নির্দেশনা পেলে মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই অঞ্চলে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন নির্মাণের বিষয়ে তাদের কিছুই জানানো হয়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আমিনবাজার-মাওয়া-মোংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর চন্দ্র দত্ত বলেন, নিয়মানুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়া হয়।