তবে স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতিনিয়ত করোনার নমুনা সংগ্রহ, আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা প্রদান, ক্রিটিক্যাল রোগীদের করোনা হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা প্রদান, নিয়মিত মিটিংসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে।
অপরদিকে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ বাস্তবায়নে কাজ করছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে প্রশাসন করোনা পরিস্থিতি মোবাবিলায় একাধিক সভা করেছে। সর্বশেষ শহরের বিভিন্ন দোকানে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে।
জেলার অধিকাংশ হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট, যানবাহনে স্বাস্থবিধি মানা হচ্ছে না। যেখানে সেখানে মানুষের ভিড়। আর এই ভিড়ের মধ্যে মাস্ক ছাড়াই চলাচল করছে মানুষজন। ইতোপূর্বে স্বাস্থবিধি মানা ও মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতে প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। তখন মানুষ কিছুটা সচেতন থাকলেও এখন একেবারেই উদাসীন।
মাস্ক ব্যবহার না করে বাজারে আসা একাধিক ব্যক্তি জানান, জীবন-জীবিকার তাগিদে তাদের বাইরে বের হতে হচ্ছে। কিন্তু কেনা কাটার সময় অধিকাংশ স্থানে ভিড় থাকায় স্বাস্থবিধি মেনে উঠা সম্ভব হচ্ছে না।
কালীগঞ্জের বানুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, প্রথম দিকে মানুষ করোনাকে ভয় করেছে। তখন অধিকাংশ মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হয়নি। কিন্তু কতদিন আর বাড়িতে বসে থাকবে। জীবন- জীবিকার তাগিদে মানুষকে ছুটতে হচ্ছে। তিনি মুখে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার সঙ্গে নিয়ে বাইরে বের হন বলে দাবি করেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবনা রানী সাহা জানান, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। গত সপ্তাহে করোনার দ্বিতীয় দফার ঢেউ সম্পর্কিত একটি মিটিং জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই রেজুলেশন পাওয়া গেলে উপজেলা পর্যায়ে আমরা মিটিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। এছাড়া আমরা ইতিপূর্বে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের ডেকে মিটিং করেছি। সেখানে প্রত্যকটি দোকানে এই স্লোগান সংবলিত লিফলেট টাঙিয়ে দেওয়ার কথা বলেছি। যারা মাস্ক পরবে না তাদের কোনও সেবা দেওয়া হবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মানতে মোবাইল কোর্ট চলমান রয়েছে। পূজার কারণে একটু শিথিল ছিল। এখন থেকে এ কর্মকাণ্ড জোরদার করা হবে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (২৬ অক্টোবর) পর্যন্ত জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪৬ জন। এ সময়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৮ হাজার ৮৩ জনের। এর মধ্যে ফলাফল পাওয়া গেছে ৭ হাজার ৭৯৮ জনের। এদের ২ হাজার ৪৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এবং ৫ হাজার ৭৫২ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৫ জন। এর মধ্যে সদরে ২৪ জন, কালীগঞ্জে ৫ জন, শৈলকুপায় ৫ জন ও কোটচাঁদপুরে একজন রয়েছেন। এছাড়া এ পর্যন্ত সদরে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ২৯ জন, শৈলকুপায় ২৪৬ জন, হরিনাকুন্ডে ১১৩ জন, কালীগঞ্জে ৪৩৫ জন, কোটচাঁদপুরে ১২৮ জন ও মহেশপুরে ৯৫ জন। এর মধ্যে চিকিৎসক ও স্বাস্থকর্মীসহ আক্রান্ত হয়েছেন ৯১ জন। জেলার কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৫০ জন। ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ভর্তি আছেন ৮ জন।