সাদামাটা আয়োজনে মাগুরার কাত্যায়নী পূজা

কাত্যায়নী পূজামণ্ডপ আলোকসজ্জা নেই, মেলা নেই, নেই কোনও উৎসবের আমেজ। তবু দেবীর বোধনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে মাগুরার কাত্যায়নী পূজা। অর্ধশত বছরের ঐতিহ্যবাহী মাগুরার কাত্যায়নী পূজা উপমহাদেশের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হলেও মহামারি করোনার কারণে এবার এ উৎসব প্রাণহীন। মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) দশমীর মাধ্যমে শেষ হবে এ পূজা।

দরিমাগুরা ছানা বাবুর বটতলা পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব সাহা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধনকারী ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা। শারদিয়া দুর্গা পূজার এক মাসের মধ্যেই এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। জাতি, ধর্ম, নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ এই উৎসব উপভোগ করেন। এ বছর করোনার কারণে সীমিত আকারে আয়াজন করা হচ্ছে।

কলেজছাত্রী ফারহানা সুলতানা বলেন, কাত্যায়নী পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও আমাদের কাছে এটি একটি উৎসব। সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে গিয়ে আমরা সবাই এ উৎসব উপভোগ করি।

শহরের নতুন বাজার এলাকার অধিবাসী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মিতুল দাশ বলেন, কাত্যায়নী উৎসবকে ঘিরে প্রতি বছর বন্ধু এবং আত্মীয় স্বজনরা আমাদের বাড়িতে আসেন। এ বছর সে সব কিছুই নেই। এমন কাত্যায়নী পূজা আগে দেখিনি।

কাত্যায়নী দেবীনিজন্দুয়ালী নিতাই গৌর সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ চিন্ময় আনন্দ দাস চঞ্চল গোসাই বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ শ্রীকৃষ্ণরূপী, স্বয়ং ভগবানকে পুত্র, বন্ধু, পতি এবং প্রভুরূপে পাবার জন্য ব্রজবাসীগণ শ্রী শ্রী কাত্যায়নী দেবীর ব্রত পালন করেছিলেন। দ্বাপর যুগে কোনও হেমন্তের প্রারম্ভে পূন্য সলিলে যমুনা নদীর তীরে মাসব্যাপী ব্রত ও পূজানুষ্ঠানের প্রচলন হয়। ব্রক্ষ্ম মূহুর্তে যমুনা নদীতে স্নান করে, তীরে বালুকা নির্মিত কাত্যায়নী মূর্তিতে ফুল, ফল ও অন্য উপকরণ দিয়ে আরাধনা শুরু করেন। এভাবে এক মাস উপাসনার পর দেবী কাত্যায়নী পূজা করা হয়।

মাগুরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদ্যুৎ কুমার সিংহ বলেন, প্রতি বছরের মত এ বছরও মাগুরায় কাত্যায়নী পুজা চলছে। এ বছর মাগুরা পৌরসভায় ১৬টি, সদর থানায় ২৯টি, শ্রীপুরে ১৩টি, মহম্মদপুর ১১টি, শালিখায় ২৩টিসহ মোট ৯২টি মণ্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে কোভিড-১৯ এর কারণে আয়োজন সীমিত করতে বলা হয়েছে।

মাগুরা জেলা পুশিল সুপার খান মহম্মদ রেজওয়ান বলেন, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কাত্যায়নী পূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে পূজামণ্ডপে আসার আহ্বান জানান তিনি।