মাস্টার্স পরীক্ষার ফল আর জানা হবে না রেশমার

মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ। চাকরি করে নিজের পায়ে দাঁড়াবেন, সুন্দরভাবে নিজের জীবন, সংসার সাজাবেন—এমন অনেক স্বপ্ন ছিল। তাকে ঘিরে পরিবারও দেখছিল অনেক স্বপ্ন। কিন্তু, পরীক্ষা দিয়ে আর বাড়ি ফেরা হলো না রেশমার। উল্টে যাওয়া বাসের সিটের ওপর ট্রাকের চাকা উঠে তার শরীরের সঙ্গে স্বপ্নগুলোও পিষে দিলো। মাস্টার্স পরীক্ষার ফল আর দেখা হবে না তার। উচ্ছল রেশমা কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় যে ১০ জন নিহত হয়েছেন, এই তরুণী তাদেরই একজন। যশোর এমএম কলেজ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গায় ফিরছিলেন তিনি। এদিকে, মেয়ের এমন করুণ মৃত্যুর খবর নিতে পারেননি তার বাবা। খবর শুনেই হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তার। গুরুতর অবস্থায় তিনি এখন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি।

রেশমা চুয়াডাঙ্গা জেলার ডিঙ্গেদহ গ্রামের আব্দুর রশীদের মেয়ে।

রেশমার বাবা আব্দুর রশীদকে হাসপাতালে ভর্তির খবর নিশ্চিত করেছেন রেশমার ফুফাতো ভাই নজরুল ইসলাম।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর তিনটা দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বারোবাজারে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গড়াই পরিবহনের দ্রুতগামী একটি বাস উল্টে গিয়ে ঘটনাস্থলেই ৯ জন এবং হাসপাতালের নেওয়ার পথে আরও একজন নিহত হন। ঘটনাস্থলে নিহতদের একজন ছিলেন রেশমা। কলেজের পরিচয়পত্র দেখে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর জানা যায়, মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে তিনি বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন।

বারোবাজার হাইওয়ে থানার ওসি শেখ মেজবাহ উদ্দীন জানান, দুপুর তিনটার দিকে খুলনা থেকে কুষ্টিয়াগামী গড়াই পরিবহনের একটি বাস ওভারটেক করতে গিয়ে বারোবাজার আমজাদ আলী তেল পাম্পের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের ওপর উল্টে যায়। এ সময় কুষ্টিয়া থেকে যশোরের দিকে যাওয়া একটি দ্রুতগামী ট্রাক গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বাসটিকে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই বাসের ৯ যাত্রী নিহত হন।