সুন্দরবনে শুকনো পাতা ভেদ করে জ্বলে উঠছে আগুন

বাগেরহাটের শরণখোলায় পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানী এলাকায় ৪ দিন ধরে চলে আগুন নেভানোর কাজ। গত ৩ দিন ধরে সন্ধ্যায় কাজ শেষ করে পরদিন সকালে ফের কাজ করতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের। এ ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (৬ মে) আগুনের ৪র্থ দিন ওই এলাকার আশপাশের আরও ৪০ স্থানে পাতা ভেদ করে জ্বলে উঠে আগুন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তা নিভিয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিসের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা আ. সাত্তার জানান, আগুন মঙ্গল ও বুধবার বিকাল পর্যন্ত সম্পূর্ণ নেভানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৯ জায়গায় আগুন দেখা যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সে আগুন নেভানোর কাজ করতে করতে স্পট বাড়তে থাকে। বিকাল ৬টা পর্যন্ত ৪০টি স্পটে আগুন নেভানোর কাজ করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, এখানে সব লতা গুল্ম গাছ। ঝরা পাতার ২ ফুট স্তূপ রয়েছে। নিচের পাতা শুকনো। আর ওপরে কাচা পাতা। হিউমাসের আগুন পাতার স্তূপের মাঝ দিয়ে পুড়তে পুড়তে অন্য দিকে চলে যায়। এভাবে আগুন জ্বলছে এখন। শুক্রবারও এ আগুন জ্বলে উঠতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ২ ফুট পাতার স্তূপ দিয়ে হেঁটে যাওয়া কঠিন। তারপর বাঘ ও সাপসহ হিংস্র বন্য প্রাণী হয়তো আছে। রাতে আলো নেই। সব মিলিয়ে বনের আগুন নেভানোর কাজ করা একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, মোরেলগঞ্জ স্টেশন কর্মকর্তা সঞ্জয় দাস বলেন, আগুনের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাগেরহাট, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার তিনটি দল বিভিন্ন জায়গায় পাইপ লাইন টেনে পানি ছিটানোর কাজ করছে।

বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, আগুন নেভানো হচ্ছে। কিন্তু পরদিন সকালে কিছু কিছু জায়গায় আবার আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বাগেরহাটের ডিএডি গোলাম সরোয়ার বলেন, সব ধরনের আগুন নেভানোর কাজ করতে তার দক্ষ এবং প্রয়োজনীয় সব উপকরণই আছে। সুন্দরবনের এই এলাকার আগুন নেভানোর সমস্যা হচ্ছে পাতার স্তূপ। ২ ফুট পাতার মধ্যে পানি প্রবেশ করছে না। আর সাপসহ হিংস্র প্রাণীর বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করতে হচ্ছে। পাশাপাশি ৪/৫ কিলোমিটার পথ উপকরণসহ পায়ে হেঁটে গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আর শুকনো পাতার ২ ফুট স্তূপের মধ্যে দিয়ে সামনে আগানো কঠিন কাজ।