হাসপাতাল পালানো রোগীদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা, গ্রেফতার ৭

যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর পালিয়ে যাওয়া সাত করোনা রোগীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সোমবার (১০ মে) সকালে পুলিশ যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে পালানো রোগীদের মধ্যে সাত জনকে গ্রেফতার করে। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতার সাত জন হলেন যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দিপাড়া এলাকার বিশ্বনাথ দত্তের স্ত্রী মণিমালা দত্ত (৪৯), সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপপাড়া গ্রামের মিলন হোসেন (৩২), রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের নাসিমা আক্তার (৫০), খুলনা সদর উপজেলার বিবেকানন্দ (৫২), পাইকগাছা উপজেলার ডামরাইল গ্রামের আমিরুল সানা (৫২), রূপসা উপজেলার সোহেল সরদার (১৭) এবং স্থানীয় যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা (১৯)।

পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এপ্রিলের ১৮ থেকে ২৪ তারিখের মধ্যে ভারত ফেরত সাত জন ও স্থানীয় তিন জন করোনা পজিটিভ রোগী যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর তারা ২৩ তারিখ সকাল ও ২৪ এপ্রিল দুপুরের মধ্যে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে জানায়। পুলিশ এরপর পালিয়ে যাওয়া রোগীদের শনাক্ত এবং তাদের স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমে ফের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে

পুলিশ জানায়, গত শনিবার যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশ ২০১৮ সালের সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইনের ২৫(২) ধারায় আদালতে নন এফআইআর প্রসিকিউশন দাখিল করে। রবিবার আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। সোমবার সকালে হাসপাতাল থেকে সাত জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। এছাড়া পরোয়ানাভুক্ত অপর তিন জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে একজন ভারত থেকে আসা এবং দুই জন স্থানীয় পর্যায়ে করোনা সংক্রমিত। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানায় পুলিশ।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৮ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল সময়ের মধ্যে করোনা সংক্রমিত সাত জন যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে দেশে আসে। এসব করোনা রোগীর মধ্যে ১৮ এপ্রিল একজন, ২৩ এপ্রিল পাঁচ জন ও ২৪ এপ্রিল একজন আসেন। জরুরি বিভাগ থেকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করোনা ওয়ার্ডে পাঠানো হয় তাদের। ওয়ার্ডে না গিয়ে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যান। ভারতে করোনাভাইরাসের একটি নতুন ধরন শনাক্তের পর এই পালানোর বিষয়টি আতঙ্কের সৃষ্টি করে। এছাড়া, সেখানে স্থানীয় পর্যায়ে ভর্তি তিন জন করোনা সংক্রমিত রোগীও হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর আজ তাদের মধ্য থেকে সাত জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।