শার্শায় ৪৩ নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জনই আক্রান্ত

গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরের শার্শা উপজেলায় ৪৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের শতকরা হার ৭৪ শতাংশেরও বেশি। এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় ৬৫০ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়ে।

শনিবার (১৯ জুন) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচালক ডা. ইউসুফ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে শার্শা উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি সিদ্ধান্তে এ ভাইরাসটির লাগাম টানতে কঠোর লকডাউন জারি করে। যা আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত বলবত থাকবে বলে নিশ্চিত করেন নাভারন সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান।

তিনি বলেন, লকডাউনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। এরপর থেকে কোনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে না। শুধুমাত্র ওষুধের দোকান ও ভারতফেরত যাত্রীদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য কয়েকটি আবাসিক হোটেল এবং খাবার হোটেল সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে।

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলি জানান, সীমান্ত জেলা যশোরের কয়েকটি উপজেলায় করোনার প্রকোপ বেড়ে গেছে। করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিভাগ এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোটা উপজেলা কঠোর লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, কঠোর লকডাউনের মধ্যে যেহেতু বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে সেক্ষেত্রে ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা চালক-হেলপাররা সবসময় মুখে মাস্ক এবং পিপিই ব্যবহার করবেন। এক জায়গায় বেশি লোক সমাগম হবে না। আর তারা যেন যাইরে বের হতে না পারে সেজন্য বন্দরের প্রতিটা গেটে একজন আনসার সদস্য ও দুইজন করে সিকিউরিটি গার্ড নিযুক্ত করা আছে।

শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা জানান, করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপজেলায় সাত দিনের কঠোর লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান করতে হবে। গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। বিকেল ৩টার পর সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। মোটরসাইকেলে একজন ও ইজিবাইকে দুইজনের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না। সব গণজমায়েত, সভা সমাবেশ, মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হোটেল রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া যাবে না এবং চায়ের দোকানে বেঞ্চ, ক্যারাম বোর্ড ও টেলিভিশন রাখা যাবে না। বিনা কারণে সন্ধ্যা ৬টার পরে ঘরের বাইরে আসা যাবে না।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আহসান হাবিব জানান, ভারতফেরত প্রত্যেক যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য সাবধানে তাদের কোয়ারেন্টাইন হোটেলে পাঠানো হচ্ছে। গত ২৬ এপ্রিল থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ভারত থেকে ৫ হাজার ৩৯৯ জন পাসপোর্টধারী বাংলাদেশে ফিরেছেন। কোভিড পজিটিভ সনদ নিয়ে ভারত থেকে ফিরেছেন ১৩ জন। ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে ৪৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ছয় জনের শরীরে মিলেছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। ভারতে কখনও যায়নি যশোরে এমন মানুষের শরীরেও মিলেছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট।