অধ্যাপক সেলিমের মরদেহ পরীক্ষার পর একই কবরে দাফন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের মরদেহ ফরেনসিক পরীক্ষার পর আবারও দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাঁশগ্রাম কবরস্থানে দাফন করা হয়।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে মরদেহ কুষ্টিয়ায় আনা হয়। এর পরই একই কবরে দাফন করা হয়েছে।

খুলনার খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনে দাফনের ১৫ দিন পর গত বুধবার কুয়েট শিক্ষক সেলিম হোসেনের মরদেহ তোলা হয়। এরপর মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তালুকদার স্বাক্ষরিত এক চিঠি পেয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহম্মেদ সাদা, খুলনা খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস, কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার, কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল কর্মকর্তা ফারহান লাবিবের উপস্থিতিতে বুধবার মরদেহ তোলা হয়েছিল।

শিক্ষক ও ছাত্রদের অভিযোগ, কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান লোকজন নিয়ে ৩০ নভেম্বর অধ্যাপক সেলিমের দাফতরিক কক্ষে প্রবেশ করে অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতন করেন। এর ফলে ৩০ নভেম্বর বেলা ৩টায় অধ্যাপক সেলিম মারা যান।

অভিযোগে বলা হয়, সাধারণ সম্পাদক সেজানসহ উপস্থিত লোকজন তাদের মনোনীত প্রার্থীকে ডায়নিং ম্যানেজার নির্বাচন করার জন্য হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিমকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ৩০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্ররা ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে জেরা শুরু করেন। পরবর্তীতে তাকে ধরে নিয়ে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন। 

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা অধ্যাপক সেলিমের কক্ষে ছিলেন। পরে  দুপুরে খাবারের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস সংলগ্ন বাসায় আসেন। বেলা ২টার দিকে তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে অধ্যাপক সেলিমকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।