দ্বিতীয় দিনের মতো ডিসি অফিসের সামনে ভবদহবাসী

ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করাসহ ছয় দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো যশোর কালেক্টরেট ভবনের (ডিসি অফিস) সামনে অবস্থান নিয়েছেন জেলার সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে সেখানে অবস্থান নেন তারা। 

এ সময় ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিৎ বাওয়ালী বলেন, ‘আমরা মানুষকে বাঁচানোর দাবিতে আন্দোলন করছি। ভবদহ অঞ্চলে সাত বছর ধরে ফসল নেই। ৪০ বছর ধরে আমরা জলের ভেতরে বাস করছি। বাড়িঘরে জল, না খেয়ে মরছি! যে কারণে এই অঞ্চলের মানুষ ফুঁসে উঠেছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন—নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে; আমরাও তো নদী বাঁচানোর আন্দোলন করছি। কিন্তু আমাদের কথা কেন বুঝতে চাইছেন না? কেন কর্ণপাত করছেন না?’ 

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন চলবে; আরও বেগবান হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ফিরে যাবো না। হয় দাবি আদায় হবে, না হয় লাশ হয়ে ফিরবো। পরবর্তী সময়ে ডিসি অফিসের সামনে আত্মাহুতির কর্মসূচি দেবো।’

কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক অনিল বিশ্বাস সংহতি জানিয়ে বলেন, ‘দিল্লিতে কৃষকেরা ৩৮০ দিন আন্দোলন করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন। তাদের আন্দোলন পুরো উপমহাদেশে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আপনারাও বিজয়ী হবেন।’

অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার হুমকি

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, গাজী আব্দুল হামিদ, চৈতন্য কুমার পাল, শিবপদ বিশ্বাস ও অধ্যাপক অনিল বিশ্বাস প্রমুখ।

ছয় দফা দাবি হলো—সরকারকে মিথ্যা তথ্য প্রদান, নদী হত্যা, জনপদের অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশা, ফসল-বসতবাড়ি, জানমালের ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে জড়িত পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ। দুই. প্রস্তাবিত প্রায় ৪৫ কোটি টাকার ‘ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ’ অবিবেচনাপ্রসূত প্রকল্প বাতিল। তিন. ক্র্যাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে মাঘী পূর্ণিমার আগেই বিল কপালিয়ায় টিআরএম (জোয়ারাধার) চালু। চার. আমডাঙ্গা খাল সংস্কার প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন ও কাজের স্বচ্ছতা আনতে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলোর নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সেনাবাহিনীর তদারকিতে সম্পন্ন করা। পাঁচ . ভবদহ স্লুইসগেটের ভাটিতে পাইলট চ্যানেল করতে ৫-৬টি স্কেভেটর লাগানো। ছয়. ২১, ৯ ও ৮ ভেন্টের গেট উঠানামা করানোর ব্যবস্থা এবং এই জনপদের মানুষের ক্ষতিপূরণ, কৃষিঋণ মওকুফ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।