সাতক্ষীরায় শনাক্তের হার ৪৮.৮৩, উপসর্গ নিয়ে মৃত ৫

সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে তিন নারীসহ পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ জানুয়ারি তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় ২৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৮৮ জন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৭৮৮ জন।

সাতক্ষীরা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ১৭ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারির মধ্যে তারা সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৩টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে বিভিন্ন সময় তাদের মৃত্যু হয়।

করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিরা হলেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুর গ্রামের মৃত বিলাত আলীর ছেলে শেখ আবদার রহমান (৮০), একই উপজেলার বাঁশদহা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী শাকিলা খাতুন (৫০), চাম্পাফুল গ্রামের বিপিন গাইনের ছেলে সুবদ গাইন (৭৫), সদর উপজেলার লক্ষীদাড়ি গ্রামের আমজাদ গাজীর স্ত্রী খালেদা বেগম (৫৫) ও সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকার রাশেদ আহম্মেদ এর স্ত্রী বিলকিস (৫০)।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরও ৭৭ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ সময় র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ২৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৪২ জন রোগী। এর মধ্যে সাত জনের করোনা পজেটিভ। বাকি ৩৫ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে আট  জন।

সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৯৪ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়া সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন কিটে ৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করে আরও ৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

তিনি বলেন, ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাত হাজার ১৬৪ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৮২৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছে চার জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ২৫৩ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন সাত জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ২৪৬ জন।

জেলায় প্রথম থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮৮ জন। উপসর্গে মারা গেছে আরও ৭৮৮ জন। গড় সংক্রমণের হার ২০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

সিভিল সার্জন জানান, গত ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলায় এক লাখ ৫৮ হাজার ৭৪১ জন অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮৫ হাজার ৭৩০ জন। এদিকে সিনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩৩ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন সাত লাখ ৯৩ হাজার ৯৩৩ জন।

ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ২২ হাজার ২৭৬ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২২ হাজার ১৫৮ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন এক লাখ ২৪ হাজার ৭৮ জন। অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ১৭ হাজার ৯১৬ জন। ফাইজার ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।

তিনি জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে ১৪ লাখ ৭৮ হাজার ৯৪ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৯ লাখ এক হাজার ৮২১ জনকে। তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১৮ হাজার সাত জনকে।