নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর গ্রাম থেকে ফুলের রাজ্য গদখালিতে এসেছেন সাদিয়া ইয়াসমিন মুন। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। ফুলের রাজ্য গদখালিতে আসার অনেক দিনের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে তার।
গদখালি থেকে সোজা চলে এসেছেন পানিসারায়; কৃষক ইসমাইল হোসেনের ফুলের বাগানে। চোখেমুখে বিস্ময় তার। তিনি বলেন, টেলিভিশন, ইউটিউব আর পত্রিকার পাতায় কেবল টিউলিপ ফুলের গল্প শুনেছি। আজ নিজ চোখে দেখলাম টিউলিপ ফুল। সামনাসামনি দেখে এত ভালো লাগছে কথায় বোঝানো যাবে না। আমি বিমোহিত, উদ্বেলিত।
যশোর কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, টিউলিপ মূলত পুষ্পজাতীয় উদ্ভিদ। বর্ষজীবী ও কন্দযুক্ত প্রজাতির গাছ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Tulipa। সন্ধ্যার পর টিউলিপ ফুলের পাপড়ি বন্ধ হয়ে যায় এবং সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গে পাপড়িগুলো মেলে ধরে। ফুলগাছের গড় উচ্চতা ১৭ সে.মি থেকে ৫০ সে.মি। Dutch Sunrise (Yellow) প্রজাতির ফুলের সেলফ লাইফ সব থেকে বেশি।
ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন পরিচর্যা করছিলেন টিউলিপের। ৫ শতক জমিতে পরীক্ষামূলক লাগিয়েছেন টিউলিপ। পলিথিনের শেডের নিচে নানা রঙে ঝলমল করছে এই সময়ের সবচেয়ে দামি ফুলগুলো। সবুজ কাণ্ড ও পাতার উপরে লাল, সাদা, হলুদ, জাম, লাল-হলুদ, সাদা-হলুদ, গোলাপি রঙের ফুলের সমারোহ।
নেদারল্যান্ডস থেকে এই ফুলের বীজ (কন্দ) এনেছে মৌমিতা ফ্লাওয়ারস। বীজপ্রতি খরচ ৭০ টাকা উল্লেখ করে ইসমাইল হোসেন বলেন, গদখালিতে আমিই প্রথম এই ফুলের চাষ করেছি। আসলে এর সৌন্দর্যে এতটাই মুগ্ধ হয়েছি, বিক্রির চিন্তা করছি না। দেখতেই মনে ভরে যায়।
এই অঞ্চলের আরেক ফুল চাষি ইমামুল হোসেন বলেন, আমরা ফুল দেখে চাষ করি। এই অঞ্চলে জারবেরা চাষ বিস্তৃতি লাভ করে প্রায় চার বছর পরে। ইসমাইলের কাছ থেকে টিউলিপের চাষ পদ্ধতি জেনে নিয়েছি। সামনের বছর তার কাছ থেকে বীজ নেবো। এই ফুলের সৌন্দর্যরূপ খুবই সুন্দর।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আসলে মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। দামি ফুলের ব্যবহার বেড়েছে। সর্বোচ্চ মূল্যমানের এই ফুলে লাভও বেশি। সামনে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস, আশা করা যায় এই ফুলটি ভালো দামেই বিক্রি হবে। এতে কৃষকরা লাভবান হবেন।