বেনাপোল দিয়ে ৪ দিন ধরে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ আমদানি হয়েছে গত ৭ এপ্রিল। এরপর থেকে সোমবার (১১ এপ্রিল) পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের কোনও চালান আসেনি।

এপিলের মাসের প্রথম ১০ দিনে ২৯৩ মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজ পেট্রাপোল বন্দর হয়ে বেনাপোল বন্দরে এসেছে। রমজানের আগের ১০ দিনে প্রায় ছয় হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।

বন্দরের কয়েকজন আমদানিকারক জানান, সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করবে না বলে ২৯ মার্চ পর্যন্ত আমদানির (ইমপোর্ট পারমিট) শেষ সময়সীমা বেঁধে দেয়। এ অবস্থায় আমদানিকারকরা রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেন। এতে বাজারে কয়েকগুণ সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে বাজারে কেজিপ্রতি দাম কমে দাঁড়ায় ১৫-২০ টাকায়। বর্তমানে পেঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়া এবং বন্ধের আশঙ্কায় খুচরা বাজারে প্রতিদিন পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গত এক সপ্তাহে বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তারা আরও জানান, রমজানে আমদানি বন্ধ হলে দাম বেড়ে যাবে এই আশঙ্কায় সরকার ২৮ মার্চ পেঁয়াজ আমদানির ওপর থেকে আমদানির সময়সীমা তুলে নেয়। ফলে আমদানির অনুমতি চলমান থাকায় আগের আমদানি করা পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা। তাদের গুদামে মজুত রাখা পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছেন না। আবার পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে না পারায় গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। সবমিলে আমদানিকারকদের আর্থিক ক্ষতির ভয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হতে চলেছে।

বেনাপোল বাজারের কয়েকজন ক্রেতা বলেন, রমজানের আগে পেঁয়াজের দাম বাড়ে। এবার দাম সাধ্যের মধ্যে আছে। ভালো মানের পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়।

পেঁয়াজ আমদানিকারক আব্দুল হামিদ বলেন, বাইরে থেকে পাইকার না আসায় পেঁয়াজ বিক্রি করা যাচ্ছে না। আশপাশের বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহ করা হচ্ছে। সরকার যদি কিছু দিন আগে আমদানি অব্যাহত থাকার ঘোষণা দিতো, তাহলে স্বাভাবিক গতিতে আমদানি চলমান থাকতো। আমাদের লোকসান গুনতে হতো না।

বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন বলেন, আমদানিকারকরা মনে করেছিলেন, সরকার রমজানে পেঁয়াজ আমদানিতে নতুন করে অনুমতি দেবে না। এ কারণে তারা বেশি করে আমদানি শুরু করেন। সরকার আবার অনুমতি দেওয়ায় দেশের বাজারে এই পণ্যের দাম পড়ে গেছে। এতে লোকসানের আশঙ্কায় তারা আমদানি করছেন না। আবার অব্যাহতভাবে আমদানি বন্ধ থাকলে দেশি বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বেনাপোল চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা শিকদার জানান, বৃহস্পতি, শনি, রবি ও সোমবার বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের কোনও চালান আসেনি। সর্বশেষ ৭ এপ্রিল ৯৩ মেট্রিক টন ৪৯০ কেজি পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবীর তরফদার জানান, দেশের বাজারে দাম কম থাকায় আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে আবার পেঁয়াজের দাম বাড়বে।