বাগেরহাটে হিন্দু বাড়িতে হামলা, কারাগারে ১৮

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ‘ইসলাম ধর্ম’ নিয়ে ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে হিন্দু যুবকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় ওই যুবকসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এর মধ্যে বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে একটি মামলা করেছেন ওই যুবকের বাবা। এই মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৮০-৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত ১৭ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

অপরদিকে, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের আমরবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার হাওলাদার বাদী হয়ে ওই যুবককে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেছেন।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বিকালে দুই মামলার ১৮ আসামিকে বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এর আগে সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। 

সোমবার রাত ১০টায় উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের আমরবুনিয়া গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার, মোংলা ও মোরেলগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

মোরেলগঞ্জ থানার ওসি সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ 

এদিকে, মঙ্গলবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য আমিরুল আলম মিলন। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, ‘হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ওই যুবকসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

আরও পড়ুন: বাগেরহাটে হিন্দু বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, আটক ৭

মোংলা-রামপাল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসিফ ইকবাল বলেন, ‘ইসলাম ধর্ম নিয়ে ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে সোমবার রাতে মিছিল নিয়ে ওই যুবকের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তার বসতঘর ভাঙচুর করা হয়। তাদের খড়ের গাদায় আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিরাজুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘ইসলাম ধর্ম নিয়ে ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে সোমবার ওই যুবকের বাড়িতে সালিশ বৈঠক হয়। সেখানে তার বাবাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। যুবক অপরাধ স্বীকার করলে তার বাবা তাকে মারধর করেন। পরে উপস্থিত সবার কাছে ক্ষমা চান যুবক। রাতে তারাবি নামাজের পর এলাকার লোকজন তাদের বাড়িতে হামলা চালায়।’