খুলনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপির আট শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বৃস্পতিবার (২৬ মে) রাতে খুলনা সদর থানার এসআই বিশ্বজিৎ কুমার বোস বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বিএনপির খুলনা মহানগরের সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ ৩৭ জনকে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় খুলনা থানার ৬ নম্বর কে ডি ঘোষ রোডে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি চলছিল। অপরদিকে বিকাল ৪টায় ছাত্রলীগ খুলনা জেলা শাখার উদ্যোগে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডাকবাংলো মোড় থেকে ঘুরে আবারও দলীয় কার্যালয়ে আসছিল। বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর পিকচার প্যালেস মোড় ক্রস করার সময় খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ইট পাটকেলসহ খুলনা জেলা ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বিএনপির নেতাকর্মীদের নিভৃত করার চেষ্টা করেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় পিকচার প্যালেস মোড় থেকে বিএনপি অফিস পর্যন্ত ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বিএনপির নেতাকর্মীদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে ১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ ৩৭ জন বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় আট শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করে খুলনা সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনার বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগ হামলা চালায়। এতে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অথচ পুলিশ উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হবে। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত থাকবেন।’
এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদার সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের অশালীন মন্তব্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষাঙ্গনের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে খুলনা মহানগর ও জেলা ছাত্রলীগের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়ে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পিছন থেকে বিএনপি, যুব ও ছাত্রদল অতর্কিত হামলা চালায়।’