যুবককে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের মামলায় খাদ্য পরিদর্শক কারাগারে

বাগেরহাটের চিতলমারীতে সাধন ঢালী (২৮) নামে এক যুবককে মুখ ও হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় করা মামলায় খুলনা সিএসডির খাদ্য পরিদর্শক মো. ইসমাঈল আদম ওরফে টুটুল মোল্লাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (৩ জুন) সকালে তাকে গ্রেফতার করে চিতলমারী থানা পুলিশ। দুপুরে বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

চিতলমারী থানার ওসি এএইচএম কামরুজ্জামান জানান, ভুক্তভোগীর বড় ভাই বাদী হয়ে নির্যাতনের অভিযোগে থানায় মামলা করেছেন। মামলার আসামি মেজবা হাসান (২২) ও হাসিব শেখকে (১৯) চিতলমারী থেকে আগেই গ্রেফতার করা হয়। আজ সকালে খুলনা পুলিশের সহায়তায় ইসমাঈল আদমকে খুলনার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ মামলার অপর আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

খুলনা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান জানান, সিএসডির খাদ্য পরিদর্শক ইসমাঈল আদমের গ্রেফতার ও কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি তিনি মৌখিকভাবে শুনেছেন। সিএসডি থেকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে বরখাস্ত করা হবে। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৩১ মে) সকাল ৭টার দিকে প্রতিবেশী রাজ্জা মোল্লার ছেলে ইসমাঈল আদম ও তার শ্যালক কলিগাতি গ্রামের আকরাম শেখের ছেলে মাহমুদ শেখ স্থানীয় সাধন ঢালীকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তারা টুটুলের রুইয়ারকুল গ্রামের পাকা বাড়ির একটি রুমে নিয়ে মুখ, হাত ও হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি এবং লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারধর করেন। খবর পেয়ে গ্রামবাসী গিয়ে গুরুতর আহত সাধনকে উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সাধন ঢালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের রুইয়ারকুল গ্রামের মৃত হরবিলাশ ঢালীর ছোট ছেলে ও লাইফ কেয়ার ব্লাড ব্যাংকের সভাপতি।

এ ঘটনায় আহতের বড় ভাই ভজন ঢালী বাদী হয়ে বুধবার (১ জুন) চিতলমারী থানায় চার জনের নামে মামলা করেন। পুলিশ এ মামলায় খুলনা সিএসডির খাদ্য পরিদর্শক ইসমাইল আদমসহ তিন আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

এদিকে, ওই যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় গত ১ জুন বিকাল ৪টায় চিতলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাগল বাজারে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। এদিন প্রায় দেড় হাজার মানুষ এ ঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য গৌতম বিশ্বাস বলেন, ‘এমন বর্বরোচিত নির্যাতনের দ্রুত বিচার হওয়া দরকার। না হলে সমাজে অপরাধ কমানো কঠিন হবে।’