‘ভাইয়া ৫ জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিল, আমিও দিয়েছি’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর সোমবার (৪ জুলাই) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

এতে ফাইয়াজ লিখেছেন, ‌‌‘...২০২১-এর জুলাইয়ে আমি আর মা কোভিডে আক্রান্ত হই। এরপর কিছুদিন সব ঠিক ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই দাদি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তার ক্যান্সার ধরা পড়লো। তিনিও একদম দ্রুত মারা গেলেন। তখন আমার এইচএসসির আর একমাস বাকি। তখন থেকেই আমারও বারবার অসুস্থ হওয়া শুরু। গত ৬-৭ মাসে ১০ বারের বেশি ডাক্তার দেখিয়েছি...তিন বছর অনেক দীর্ঘ একটা সময় পেরিয়ে গেছে। যা যা ঘটেছে তার বেশিরভাগই আমার আশা ছিল না। খুব দ্রুতই সব ঘটে গেছে। হঠাৎ নিজেকে সম্পূর্ণ এমন একটা জায়গায় আবিষ্কার করেছি, যেখানে কখনও নিজেকে ভুলেও ভাবিনি।...পাঁচ জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছি। কোথাও-ই একদম হতাশ হতে হইনি।’

তিনি আরও লেখেন, ‘ভাইয়া পাঁচ জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিল, তাই আমিও পাঁচ জায়গাতেই দিয়েছি। আর কোথাও দেওয়ার ইচ্ছা নেই। কোথায় ভর্তি হবো এখনও নিশ্চিত না। তবে বুয়েটে হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’

সোমবার (৪ জুলাই) ঢাবির ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এতে জীববিজ্ঞান, ফার্মাসি, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ও ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটে আবরার ফাইয়াজ মেধা তালিকায় ৪৪তম স্থান অধিকার করেন।

এর আগে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৪৫০তম স্থান অর্জন করে যন্ত্রকৌশল বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান আবরার ফাইয়াজ। বর্তমানে গাজীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে (আইইউটি) কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। 

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতনে নিহত হন তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বাদী হয়ে চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। 

অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর আবরার ফাহাদকে হত্যার দায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।